Health

সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় – সিজারের পর সেলাই কাটার নিয়ম

সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় – যারা মূলত সিজারের রোগী রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে তার শিশুকে দেখা শোনা করা এবং এর পাশাপাশি নিজের খেয়াল রাখাটা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে অযত্নর কারণে বিভিন্ন ধরণের মারাত্মক ঝুঁকি মধ্যে পরড়েন। এইজন্য সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় এবং সিজারের পর সেলাই কাটার নিয়ম সম্পর্কে সিজারিয়ান মায়েদের জানতে হবে। 

প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা যখন প্রথমবার গর্ভধারণ করে সেই সময় তার মনের মদ্ধ্যে হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক করে। এটি মূলত প্রতিটি মায়ের ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। সিজারের পর একজন মায়ের বাচ্চার যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিজের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে সেজন্য সিজার অপারেশনের পর কিছু নিয়ম মানা খুবই জরুরী।

তাই এই পোস্টে সিজারের পর শোয়ার নিয়ম এবং সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় ও সিজারের সেলাই শুকানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি সিজার করার পর শোয়ার নিয়ম এবং কিভাবে দ্রুত ক্ষত শুকানো যায় তা জেনে না থাকেন তাহলে এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন আশা করছি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।

সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায়

সিজারের সেলাই নরামালি ২ মাসের মতো সময় লাগে। তবে যাদের শরীরে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা থাকে তাদের সেলাই শুকানোর জন্য কিছুটা সময় লেগে যায়। আবার যাদের দেহ একটু রসালো টাইপের হয় তাদের ক্ষেত্রে তুলনামূলক একটু বেশি দিন সময় লেগে যায় আবার অনেকের কাটা স্থানে রক্ত পুঁজ বের হতে থাকে। ফলে কাঁটা স্থানটি শুকাতে বেশ অনেক দিন সময় লেগে যায়। 

তবে আপনি যদি সঠিকভাবে আপনার নিজের যত্ন বা পরিচর্যা নিতে পারেন তাহলে অল্প কিছুদিনের মধ্যে সে ঘা শুকিয়ে যাবে। অনেকে রয়েছে সিজারের কয়েকদিন পর থেকে একটু সুস্থ মনে হলে সকল রকম কাজ করতে থাকে যার ফলে সেলাই শুভতে অনেক সময় লেগে থাকে আবার অনেকের ইনফেকশনও হয়ে যায়। তাই সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত ভারী তেমন কোন কাজ করা।

সিজারের পর শোয়ার নিয়ম

আপনার কাটা স্থানটি যাতে কোনরকম চাপের মুখে না থেকে এজন্য আপনাকে চিৎ হয়ে ঘুমাতে হবে। আর বেশিরভাগ মহিলা সিজারের পর চিৎ হয়ে ঘুমানোকে আরামদায়ক মনে করেন। 

সিজারের পর শোয়ার নিয়ম

সিজারের পর অধিকাংশ মায়েরা এক সাইড শুয়ে থাকতে আরাম পান। আপনি যদি এ সময়ে বাঁ দিকে ঘুরে শুয়ে থাকেন, তাহলে এতে করে আপনার রক্ত সঞ্চালন এবং হজম ভালো হয়। এভাবে শুয়ে থাকলে আপনার কোনই ও হাতের ওপর ভর দিয়ে উঠতে পারবেন।

সিজারের পরে সোজা হয়ে শুয়ে হাঁটুর নিচে একটি বালিশ নিতে হবে এতে করে আপনার পেটে কোনরকম চাপ পরবে না এবং আপনি খুব রিল্যাক্সে ঘুমাতে পারবেন।

আপনাকে বাম দিকে শোয়ার চেষ্টা করতে হবে তাহলে বাম রক্ত সঞ্চালন ভালোভাবে হবে এবংন পেটকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য পেটে পাশে একটি বালিশ ব্যবহার করতে পারেন।

এ সময় চেষ্টা করবেন পিঠ উঁচু রাখা এর জন্য আপনি শোয়ার সময় পিঠের পিছনে একটি বালিশ রেখে হেলানা দিয়ে শুতে পারেন। এছাড়া আপনি চাইলে ভালো হেলানা আদায়ও চেয়ারও ব্যবহার করতে পারেন। সিজারের পর শোয়ার নিয়ম জেনে নেওয়ার পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়ার কারণ আমাদের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন।

সিজারের পর বেল্ট পরার নিয়ম

আপনি যদি প্রথমবার মা হয়ে থাকেন তাহলে হয়তো ভাবছেন সিজারের এক থেকে দুই দিন পর থেকেই হয়তো ব্যবহার করতে হবে। তবে এটা একদমই করা যাবে না। 

সিজারের পরে বেল্ট ব্যবহার করতে চাইলে আপনার সেলাই শুকানোর আগ পর্যন্ত ওয়েট করা লাগবে। আপনার কাটা স্থানটি পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে সেদিন থেকেই বেল্ট ব্যবহার করতে পারবেন। 

তবে সিজারের পর পেটের অংশে বেল্ট ব্যবহার করতে হয়। পেটের নিচের অংশে বেল্ট ব্যবহার করে যদি আপনি আরামবোধ করেন তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি নিচের অংশেই বেল্ট ব্যবহার করতে পারেন। 

এছাড়া সেলাইয়ের অংশে বেল্ট ব্যবহার করা যাবে এতে সেলাই এর স্থানে হওয়ার সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। তবে নিজের মতামত থাকবে যে কাটা জায়গার উপর বেল্ট ব্যবহার করতে পারেন।

সিজারের পর সেলাই কাটার নিয়ম

আপনি যদি সিজারের পর সেলাই কাটতে চান তাহলে সেলাই কাটার জন্য আপনি যে উপকরণগুলো ব্যবহার করবেন যেগুলো জিনিস পত্র অবশ্যই জীবন্মুক্ত করে নিতে হবে ।

এরপর আপনাকে সিজার করার জায়গায় যে টেপ লাগানো রাখবে সেটা তুলে সেখানে ভায়োডিন দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়ে গেলে সেখানে যে সুতা দেওয়া থাকবে সে সুতাটিকে যতটুক সম্ভব চামড়া ঘেঁসে হালকা করে টেনে ধরে কেটে দিতে হবে। ভিতরে যতটুকু সুতা থেকে যাবে তা  ধীরে ধীরে চামড়ার সাথে মিশে যাবে।

সিজারের পর কাটা স্থানের যত্ন

সিজারের পর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয় যাতে আপনার ক্ষত দূরত্ব সেরে যাই এবং আপনি সি সেকশনের ঝুঁকি থেকে বেঁচে যেতে পারেন। সিজারের কাটা স্থানের যত্ন নিতে কিছু সহজ এবং কার্যকরী পদ্ধতি রয়েছে যা আপনি অনুসরণ করতে পারেন:

সিজারের পর কাটা স্থানের যত্ন

প্রথমত আপনাকে কাটা স্থানটি একেবারে পরিষ্কার রাখতে হবে। আর প্রতিদিন ২ বেলা করে কাটা স্থানের চারিদিকে ভালোভাবে ধুয়ে একটি পরিস্কার শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।

গরম পানিতে কাটা স্থানে না ডুবিয়ে, একটি নরম কাপড় দিয়ে ধুয়ে শুকনো রাখতে হবে। এতে ক্ষতস্থান ভালোভাবে শুকাতে সাহায্য করবে।

অপারেশন স্থানে কোনো ধরণের পুঁজ বা রক্তপাত হলে তা দ্রুত চিকিৎসকের কাছে জানাতে হবে। পুঁজ বা রক্তপাত হওয়া সাধারণত ইনফেকশনের লক্ষণ, তাই অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।

সিজারের পর প্রথম কিছু দিন ব্যথা অনুভব হওয়া স্বাভাবিক, তবে যদি ব্যথা তীব্র হয়ে ওঠে বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তা হতে পারে একটি সংকেত। এছাড়া, কাটা স্থানে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক গন্ধ হলে চিকিৎসকের কাছে জানাতে হবে। 

আপনি যদি চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোন অ্যান্টিবায়োটিক বা ক্রিম ব্যবহার করেন, তাহলে সেগুলি সঠিকভাবে ব্যবহার করুন। সিজারের কাটা স্থানে যেকোনো ধরনের ব্যথা, লালভাব বা ফোলাভাব কমাতে সঠিক ওষুধ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

শেষে, সিজারের পর কাটা স্থানের যত্ন নিতে সময় নিন, তবে সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ

  • সিজারের কাঁটার স্থান ফুলে যাবে এবং লাল হবে।
  • সিজারের কাটা জায়গায় প্রচন্ড রকমের ব্যথা হবে।
  • কাটা জায়গার চারপাশে লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে
  • ক্ষতস্থান থেকে দুর্গন্ধযুক্ত রস পড়তে পারে
  • কাটা জায়গায় প্রচন্ড ব্যথা হতে পারে

সিজারের পর একজন মায়ের বাচ্চার যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিজের যত্ন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে সেজন্য সিজার অপারেশনের পর কিছু নিয়ম মানা খুবই জরুরী।

সিজারের পর খাবার তালিকা

বর্তমানে প্রতিটা গর্ভবতী মা বাচ্চা প্রসব করার জন্য সিজারিয়ান ব্যবস্থাকেই বেছে নিচ্ছে। কারণ নরমাল ডেলিভারিতে বাচ্চা প্রসব কালে একজন গর্ভবতী মায়ের প্রচুর পরিমাণ পেইন এবং ব্যথা হয়ে থাকে আর যেটি অনেকে সহ্য করতে পারে না। আর সিজারের মাধ্যমে একজন গর্ভবতী মাকে অবশ করে তলপেট একটু কেটে তারপর বাচ্চা বের করা হয় যার ফলে তেমন কোন কষ্ট হয় না।

সিজারের পর খাবার তালিকা

১। এই সময় প্রতিটি মায়ের প্রোটিনের প্রয়োজন হয়ে থাকে তাই এ সময় বেশি বেশি প্রোটিন যুক্ত খাবার খেতে হবে যেমন পনির, দুধ, ডিম ইত্যাদি জাতীয় খাবার বেশি বেশি করে খেতে হবে।

২। বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন যুক্ত খাবার বেশি বেশি করে খেতে হবে কারণ এটি মায়েদের টিস্যু মেরামত ত এবং শরীরে কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে থাকে। বিশেষ করে এ সময় ভিটামিন সি যুক্ত খাবার যেমন কমলা, আঙ্গুর তরমুজ ইত্যাদি।

৩। মসুর ডাল বেশি বেশি করে খেতে হবে কারণ মসুরের ডালে রয়েছে ফাইবার এবং খনিজ যা দেহে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে।

৪। এবং বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি যেমন লাল শাক সবুজ শাক কচু শাক ইত্যাদি বেশি বেশি করে খেতে হবে কারণ এগুলো শরীরের রক্ত শূন্যতা থেকে দূর করে এবং রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।

বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, ডাল, পেঁয়াজ, ঢেরস এগুলো থেকেও সমস্যা হতে পারে। যদি সমস্যা দেখা দেয় তাহলে এই সকল খাবার গুলো এড়িয়ে চলায় ভালো। কোন একটি খাবার যদি আমাদের খাবার তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় তাহলে তার পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরে অভাব দেখা দিতে পারে।

এক্ষেত্রে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। সিজারের পর খাবার তালিকা জেনে নেওয়ার পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি হয় তা আমাদের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন।

সিজারের পর মায়ের যত্ন 

সিজারের পর মায়ের যত্ন কিভাবে নিবেন এই বিষয়ে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিজারের পর অসুস্থ রোগী বা মায়ের অনেকটাই যত্ন নিতে হয়। কিন্তু আমরা সেটা অনেকে জানিনা তাই সঠিকভাবে যত্ন নিতেও পারি না। 

ভারী কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অতিরিক্ত ভারী কোন কিছু যদি জাগাতে যায় বা কাজ করতে যায় গিয়ে পেটে টান লেগে কাঁটা অংশে ক্ষতি দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত টেনশন নিতে হওয়া যাবে না।

সিজারের কতদিন পর মিষ্টি খাওয়া যায়

সিজার করার ১ মাস পরে আপনি মিষ্টি খেতে পারবেন তবে আপনার ক্ষত স্থানের অবস্থা বুঝে খেতে হবে। কারণ ১ মাসেও যদি আপনার কাটা স্থান ভালোভাবে না শুকায় তাহলে মিষ্টি খাওয়া যাবে না। অনেকের র ডায়াবেটিস এবং ইনফেকশন জাতীয় সমস্যা থাকে তাদের ক্ষত্রে মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে বিরত থাকা অতি উত্তম। সিজারের কতদিন পর মিষ্টি খাওয়া যায় জেনে নেওয়ার পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না তা আমাদের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন।

সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়

অনেক মহিলা আছেন আছেন যাদের বিভিন্ন রকম প্রয়োজনে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হয় যার ফলে আমাদেরকে অনেক জার্নি করতে হয়। কিন্তু একজন সিজারের রোগীর পক্ষে অপারেশনের পরপরই কোথাও জার্নি করা সম্ভব নয়।

কেননা গাড়িতে অনেক সময় ভাঙ্গা রাস্তার কারণে অনেক বেশি ঝাকুনি হয় যার ফলে পেটের কাটা জায়গায় অনেক ব্যথা অনুভব হবে। আর এতে করে আপনার কাটা স্তাহ্নটি শুকাতেও আরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে। 

তাই আপনি যদি একজন সিজারের রোগী হয়ে থাকেন এবং আপনার যদি তিন মাস পূর্ণ হয় তাহলে আপনি যে কোন জায়গায় যাওয়ার জন্য জার্নি করতে পারবেন।

লেখকের শেষ মতামত

এই ছিল আজকের সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় এবং সিজারের পর সেলাই কাটার নিয়ম সম্পর্কিত সকল তথ্য সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করছি সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় তা জানতে পেরেছেন।

এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকায় সেই সম্পর্কে জানতে পারবে।ন

Atif Abdullah

Atif Abdullah is a passionate writer and expert in technology, Information and News. With years of experience in Information, he enjoys sharing insightful and well-researched content that helps readers stay informed. Atif has a keen interest in digital trends and his writing reflects his deep understanding and analytical approach.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button