শবে কদরের নামাজ কত রাকাত – শবে কদরের ফজিলত

শবে কদর ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও ফজিলতপূর্ণ একটি রাত, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এই রাতে কুরআন মাজিদ অবতীর্ণ হয়েছে, এবং এটি বিশেষ রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের রাত হিসেবে বিবেচিত।শবে কদরের নামাজ কত রাকাতমুসলমানরা এই রাতকে পবিত্র মনে করে ইবাদতে মশগুল থাকে, বেশি বেশি নামাজ পড়ে, কুরআন তিলাওয়াত করে ও দোয়া করে।
শবে কদরের জন্য নির্দিষ্ট কোনো নামাজ নেই, তবে বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম এ রাতে নফল ইবাদত করতেন এবং শবে কদরের বরকত লাভের জন্য বিশেষভাবে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন।
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত ও শবে কদরের দোয়া সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এছারাও আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জেনে যাবেন শবে কদরের ফজিলত, কদরের তাসবিহ, লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস, শবে কদরে করণীয় ও বর্জনীয়সহ শবে কদর সম্পর্কে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্যসমূহ। তো চলুন বিস্তারিত শুরু করা যাক।
শবে কদরের ফজিলত
শবে কদর শব্দটি মূলত ফারসি ভাষা থেকে আগত হয়েছে। আরবিতে লাইলাতুল কদর হিসেবে পরিচিত’। আর এই লাইলাতুল কদরের অর্থ হল পবিত্র রজনী। পবিত্র রমজান মাসে একটি রাত রয়েছে যে রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম, আর সে রাত হলো লাইলাতুল কদরের রাত। প্রত্যেক মুসলিমগনের প্রতি এ শবে কদরের রাত অত্যান্ত ফজিলতপূর্ন একটি রাত। জেনে নিন শবে কদরের ফজিলতগুলো সম্পর্কে।
লাইলাতুল কদরের রাত প্রত্যেক মুসলিমদের জন্য অতি বরকতপূর্ন রাত। এ রাতে ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। বিভিন্ন হাদিসে এসেছে- যে ব্যক্তি ইমানের সাথে লাইলাতুল কদরের রাতে আমল করবে সে ব্যক্তির পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।
পবিত্র আল-কুরআন আমাদের হিদায়ের সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা যা নাজিল হয়েছিল রমজান মাসের লাইলতুল কদরের রাতে। এ রাতের মাধ্যমেই আমরা আমাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে নির্দেশনা হিসেবে পেয়েছি।
শবে কদরের রাতে বলা দোয়াগুলো মহান আল্লাহ তায়ালা কবুল করে নেন। এ রাতে বান্দা যা চায় আল্লাহ তায়ালা তাকে তাই দেন।
শবে কদরের রাতে ফেরেশতারা বরকত, রহমত ও প্রশান্তি নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন। এ রাত প্রত্যেক ইমানদার ব্যক্তির জন্য রহমত ও বরকতস্বরূপ।
আমাদের সকলের জন্য এ রাত খুবই গুরুত্বপূর্ন। এ রাতের মাধ্যমে আমরা আমাদের পূর্বে গুনাহগুলো ঝড়িয়ে ফেলতে পারবো এবং মহান আল্লাহর নিকট প্রিয় হয়ে উঠতে পারবো।
শবে কদরের দোয়া
যে ব্যক্তির পূর্বে কোনো আমল না থাকার কারনে ইসলামে কোনো সম্মান বা মর্যাদা নেয় কিন্তু সে ব্যক্তি যদি লাইলাতুল কদরের রাতে তওবা এবং ইবাদত করে তাহলে এ রাতের মাধ্যমে তিনি একজন সম্মানিত ও মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি হয়ে যান। এছারাও এ রাতে পবিত্র কুরআন মাজিদ নাজিল হয়েছিল যে কারণে এ রাতটি অধিক সম্মানিত।
শবে কদরের ইবাদত আমরা নামাজ, জিকির-তাসবিহ এবং বিভিন্ন দোয়ার মাধ্যমে করতে পারি। আমাদের মধ্যে অনেকের জানা নেয় শবে কদরের রাতে কোন দোয়াগুলো পড়তে হবে। তাই জেনে নিন শবে কদরের রাতের দোয়াগুলো সম্পর্কে।
শবে কদরের রাতে আপনাকে যেই দোয়াটি বেশি বেশি পড়তে হবে তা হচ্ছে, “আল্লহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আ’ফওয়া ফা’ফু আন্নী”। এর অর্থ হচ্ছে -হে আমার রব! নিশ্চয় আপনি অতি ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন। (সুনানে তিরমিজি: ৩৫১৩)
উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞেস করলেন- হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি জানতে পারি লাইলাতুল কদরের রাত কোনটি, তাহলে আমি সে রাতে কি বলব? এর উত্তরে রাসুল (সা.) এ দোয়াটি পড়ার কথা বলেছিলেন। এ দোয়াটি শবে কদরের রাতে পড়া অনেক ফজিলতপূর্ন।
এছারাও পবিত্র আল কুরআনে বিভিন্ন ক্ষমা প্রার্থনার দোয়াগুলো রয়েছে যেমন-
রব্বানাগফিরলি ওয়া লিওয়ালিদাইয়্যা ওয়া লিলমুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব’। অর্থ-হে আল্লাহ! যে দিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন তুমি আমাকে, আমার বা-মাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা কর। (সুরা ইবরাহিম: আয়াত ৪১)
রব্বানা জলামনা আংফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানাকুনান্না মিনাল খসিরিন”। অর্থ হে আমার আল্লাহ! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি করুনা না করুন তাহলে আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবো। (সুরা আরফ: আয়াত ২৩)। ( আরবি উচ্চারন দেখে দোয়াগুলো পড়বেন)
সুতরাং শবে কদরের রাতে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনার দোয়াগুলো পড়বেন। পাশাপাশি আপনার মনের চাওয়া গুলো মহান আল্লহর নিকট পেশ করবেন। বেশি বেশি দোয়ার মাধ্যমে রোজাদার মুমিন ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তায়ালা গোনাহ থেকে মুক্তি দেবেন এবং নাজাত দান করবেন।
শবে কদরের দোয়া জেনে নেওয়ার পাশাপাশি আপনারা চাইলে ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম ১০০ বার পড়লে কি হয় এই বিষয়ে আমাদের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন।
শবে কদরের নামাজ কত রাকাত
শবে কদরের রাত সকল বান্দাদের ইবাদত বন্দেগির রাত। এ রাতে ইবাদতবন্দেগির মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করা যায়। আর এজন্য বেশি বেশি নফল নামাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। তবে শবে কদরের নামাজ নিয়ে আমাদের সমাজে অনেকের কিছু ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে। অনেকেই সঠিকভাবে জানে না শবে কদরের নামাজ কত রাকাত। তো চলুন বিস্তারিত জেনে নিই।
শবে কদরের নামাজের নির্ধারিত কোনো পদ্ধতি নেয়। এ নামাজ নির্ধারিতভাবে কত রাকাত সেটির কোনো সহিহ হাদিস নেয়। আমরা অনেকেই মনে করে থাকি শবে কদরের নামাজে প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পর একটি সুরা এতবার পড়তে হবে দিত্বীয় রাকাতে কম পড়তে হবে। এটি সম্পূর্ন ভুল একটি পদ্ধতি এবং মানুষের মনগড়ানো।
শবে কদরের রাতে বেশি বেশি ২ রাকাত করে নফল নামাজ পড়তে হয়। আসলে নামাজের নির্ধারিত কোনো রাকাত সংখ্যা নাই আপনি যত খুশি দুই রাকাত, দুই রাকাত করে পড়তে পারবেন। এ নামাজের সঠিক পদ্ধতি হলো অন্য নামাজ আপনি যে নিয়মে পড়েন ঠিক সে নিয়মে পড়া। তবে এ নামাজ অত্যন্ত সুন্দর ও মনোযোগ সহকারে পড়বেন এবং কেরাত, রুকু ও সেজদা লম্বা করবেন।
শবে কদরের রাতের নফল নামাজগুলোতে কেরাত, রুকু ও সেজদা লম্বা করা উত্তম। হাদিসে এ রাতের নফল নামাজ আদায়ে সূরা ফাতিহার পরে নির্ধারিত কোনো সুরা পড়ার কথা বলা হয় নি। সুরা ফাতিহার পরে পবিত্র আল কুরআনের মধ্য থেকে যেকোনো একটি আপনার সুবিধামতো তেলওয়াত করলেই হবে।
নির্দিষ্ট কোনো সুরা দিয়ে যদি শবে কদরের নামাজ পড়াকে কেউ সুন্নাহ মনে করে পড়ে তাহলে তার জন্য এটি এক ধরনের বিদআত হবে। তাই আমরা চেষ্টা করবো শবে কদরের রাতকে সঠিকভাবে সঠিক নিয়মে কাজে লাগানোর।
কদরের রাতের তাসবীহ
তাসবীহ হলো সে বাক্য যার মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা করা হয়। তাসবীহ পাঠ কারীকে মহান আল্লাহ তায়ালা পচ্ছন্দ করেন এবং তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন। যেকোনো সময় তাসবীহ পড়লে সওয়াব পাওয়া যায়। তাসবীহর ফজিলত অনেক। পবিত্র আল কুরাঅনেও তাসবিহ পাঠের কথা বলা হয়েছে। তাই শবে কদরের রাত যে রাত অধিক মর্যাদসম্পন্ন সে রাতে আমরা তাসবীহ পাঠ করবো। এতে মহান আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রতি অনেক ক্ষমাশীল হবেন।
শবে কদরের রাতে সওয়াব বেশি পেতে হলে বেশি বেশি তাসবীহ পড়তে হবে। আল্লাহর প্রশংসাকারী ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তায়ালা ভালোবাসেন। তাই কদরের রাতে নফল নামাজ ও কুরআন তেলওয়াতের পাশাপাশি তাসবীহ পাঠেও গুরুত্ব দিতে হবে।
সুতরাং আমাদের সবার উচিত কদরের রাত পেলেই আল্লাহর প্রিয় তাসবীহগুলো যেমন-সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ইত্যাদি তাসবীহগুলো বেশি বেশি পড়া উচিত। কুরআন ও হাদিস থেকেও এ তাসবীহগুলো পড়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস
লাইলাতুল কদরের রাত হলো পবিত্র আল-কুরআন নাযিলের রাত। যে রাত শবে কদর হবে সেদিনের সন্ধ্যা থেকে ফজর পর্যন্ত পুরো সময় একটি বরকতপূর্ন রাত। আর এ রাত প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা একটি নেয়ামত। এ রাতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিসগুলো।
*আয়েশ (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা রামজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে শবেকদর অনুসন্ধান করো। (বুখারি, হাদিস: ২০১৭)
*আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্নিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন- যে ব্যক্তি রমজানের রোজা ইমানের সাথে সওয়াবের আশায় পালন করবে তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ইমানের সাথে সওয়াবের আশায় লাইলাতুল কদরের রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে। তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়। (বুখারি হাদিস: ২০১৪)
*আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্নিত, রসূলুল্লাহ (সা.) বলতেন- তোমাদের মাঝে রমজান মাস এসে উপস্থিত হয়েছে। এ মাস অতি বরকতময় ও কল্যানময়। আল্লাহ তায়ালা তোমাদের উপর এ মাসের রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানগুলোকে আটক রাখা হয়। এ মাসে একটি রাত রয়েছে যে রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ রাতের কল্যান থেকে যে ব্যক্তি বঞ্চিত হলো সে সত্যিই হতভাগা। (সুনানুন নাসায়ী: ২১০৬)
এই রাত কুরআন ও হাদিসের আলোকে খুবই ফজিলতপূর্ন একটি রাত। এটি প্রতিটা মুসলিম উম্মাতের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক বিশেষ নিয়ামত। যেই ব্যক্তি এই রাত পেয়ে আমল করলোনা সে সত্যিই একজন হতভাগা। এজন্য আমাদের সবার উচিত এ রাতে বেশি বেশি নেক আমল করে আল্লাহর প্রিয় হয়ে উঠার। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস জেনে নেওয়ার পাশাপাশি আপনারা চাইলে তারাবির নামাজের নিয়ত ও দোয়া এই বিষয়ে আমাদের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন।
শবে কদরে করণীয় ও বর্জনীয়
শ্রেষ্ঠ একটি রাত শবে কদরের রাত। এ রাতে বান্দার করা আমলগুলো মহান আল্লাহ তায়ালা খুবই পচ্ছন্দ করেন। তবে মহান আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করতে সঠিকভাবে কদরের রাত পালন করতে হবে। তাই শবে কদরের রাতে কিছু করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় রয়েছে যেগুলো মুসলিম হিসেবে আমাদের লক্ষ্য করা প্রয়োজন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক শবে কদরে করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো কি কি।
শবে কদরের রাতে করণীয় বিষয়গুলো হলো:
শবে কদরের রাতগুলোতে আমাদের সকলকে কুরআন ও হাদিস মোতাবেক আমল করতে হবে। এ রাতের ইবাদত সম্পর্কে নিজেকে এবং পরিবারের সবাইকে সজাগ করতে হবে। শবে কদরের রাত যেন মিস না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
কারণ আমরা অনেকেই মনে করি শবে কদরের রাত মানে ২৭ অথবা ২৯ রমজানের রাত এ দুটি রাতের মধ্যে যেকোনো একদিন কদরের রাত। তবে আমাদের এ ধারণা ভুল, বহু হাদিস থেকে প্রমাণিত কদরের রাত সুনির্দিষ্ট নয়। রমজানের শেষ দশকের বেজোর রাতগুলোর মধ্যে যেকোনো একদিন কদর হয়ে যেতে পারে। তাই বুদ্ধিমানের কাজ হলো বেজোড় রাতগুলোতে কদর তালাশ করা।
বেশি বেশি তওবা ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা। শ্রেষ্ঠ এ রাতে গুনাহ থেকে আমাদের পানাহ চাইতে হবে মহান রবের কাছে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) কদরের রাতে বেশি বেশি বর্ণিত দোয়া-আল্লহুম্মা ইন্নাকা আফুউং তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি”। এ দোয়াটি পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন।
সূর্যাস্তের পর পরই কদরের রাত শুরু হয়ে যায়। তাই এ সময় থেকেই আমাদের ইবাদতের প্রস্তুতি নিতে হবে। নফল নামাজ দুই রাকাত করে, কোরআন তেলওয়াত, জিকির, তাসবীহ, দুরুদ, দানসদকার দিকে বিশেষভাবে মনোযোগ দিতে হবে।
শবে কদরের রাতে বর্জনীয়
শবে কদরের রাতে সকল ধরনের বিদআত বর্জন করতে হবে। আমদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা শবে কদরের রাতটিতে সঠিকভাবে কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী আমল করেন না। ফলে এটি সুন্নাহ পদ্ধতিতে হয় না এবং তা বিদআত হয়ে যায়। আর বিদআত করলে সওয়াব তো পাওয়ায় যাবে না তার সাথে আমরা গুনাহয় লিপ্ত হবো।
অতিরিক্ত ঘুম ও বিশ্রাম বর্জন করতে হবে শবে কদরের রাতে। অতিরিক্ত ঘুম ত্যাগ করে শবে কদরের রাতে ইবাদতে লিপ্ত থাকা হলো প্রকৃত ইমানদারের কাজ।
মানুষের সাথে খারাপ আচরন ও গীবত থেকে মুক্ত থাকতে হবে। এগুলো কদরের রাতের ইবাদতগুলোকে নষ্ট করে দেয়। এসব ছাড়াও সব ধরনের খারাপ আচরণ ও সকল ধরনের গুনাহ থেকে সম্পূর্ন দূরে থাকতে হবে এবং পরবর্তীতে এসব থেকে দূরে থাকতে আল্লাহর কাছে হেদায়েত প্রার্থনা করতে হবে।
কদরের রাতে আতশবাজি ফাটানো, দলবেঁধে আড্ডাদেওয়া, হৈহুল্লোড় করা ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
সুতরাং প্রকৃত ইমানদারের কাজ হলো শবে কদরের রাতে বর্জনীয় বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা এবং করণীয় বিষয়গুলোর উপর আমল করা।
লেখকের শেষ মতামত
পরিশেষে বলতে চাই, শবে কদরের রাত আমাদের জন্য অতি বরকতপূর্ন একটি রাত। তাই আমরা চেষ্টা করবো এ রাতে বেশি বেশি নফল নামাজ, জিকির, তাসবিহ, ইস্তেগফার, দুরুদ এবং কুরআন তেলওয়াত করে সারারাত ইবাদত করা। এ রাত আমাদের কাছে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের এবং পুরষ্কার অর্জনের একটি মাধ্যম।