Health

অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি – অন্ডকোষ ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা

অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি যার মধ্যে থাকতে পারে একটি আঘাতজনিত সমস্যা, কিডনিতে পাথর, একটি হার্নিয়া, একটি সংক্রমণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন খারাপ স্বাস্থ্য অবস্থা। অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি তা জেনে সে হিসেবে এই অন্ডকোষ ব্যাথার চিকিৎসা করা হয়।

আমাদের আশেপাশে এমন অনেকেই আছেন যারা এই অন্ডকোষ ফুলা রোগে আক্রান্ত। অন্ডকোষ ফোলা ও ব্যথাজনিত সমস্যার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছেন কিন্তু কারো সাথে আলোচনা করতে লজ্জাবোধ করেন। অন্ডকোষ ফুলে যাওয়ার কারণ ও অন্ডকোষ ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

অণ্ডকোষে ব্যথা কি

অণ্ডকোষজনিত ব্যথা হচ্ছে অণ্ডকোষ জড়িত একটা উপসর্গ। অণ্ডকোষ পুরুষ জননতন্ত্রের একটা অংশ যা শুক্রাণু বা বীর্য এবং হরমোন উৎপন্ন করে জননতন্ত্রের সঠিক ক্রিয়াকলাপের জন্য। অন্তর্নিহিত কোনও কারণের জন্য অণ্ডকোষে ব্যথা হতে পারে এবং অণ্ডথলি, শুক্রাশয়, অথবা লাগোয়া অঙ্গগুলির থেকেও ব্যথা উদ্ভূত হতে পারে।

সংক্রমণ থেকেও অণ্ডকোষে প্রদাহ ও ব্যথা হয়। নানা কারণে এই সংক্রমণ হতে পারে। এই সংক্রমণ হতে পারে এসটিআই বা যৌনতাবাহিত ভাইরাস সংক্রমণের ফলে। অথবা ইউটিআই বা মূত্রাশয়ের সংক্রমণের ফলে। সংক্রমণের ফলে অণ্ডকোষ ফুলে গিয়ে ব্যথা করে।

অন্ডকোষে ব্যথার উপসর্গ কি

অণ্ডকোষজনিত ব্যথা হচ্ছে সাধারণত একটা অন্তর্নিহিত অবস্থার কোনও উপসর্গ। কারণের উপর ভিত্তি করে, এটা অন্যান্য উপসর্গগুলির দ্বারা সহগামী হতে পারে। যেমন-

১। বমি বমি ভাব এবং বমি করা

শুক্রাশয় বা অণ্ডকোষগুলির মুচড়ে যাওয়া এবং পেটে অস্বস্তির কারণে বমি বমি ভাব এবং বমি করার অভিজ্ঞতা হতে পারে।

২। জ্বর

সংক্রমণের কারণে ব্যথাসহ জ্বর হতে পারে।

৩। পেটে ব্যথা

এটা শুক্রাশয় বা অণ্ডকোষগুলি এবং কুঁচকি থেকে একটা রেফার্ড পেইন বা আরোপিত ব্যথা (ব্যথাটার উৎসস্থলের বদলে অন্য কোনও স্থানে অনুভূত ব্যথা) হতে পারে এবং অণ্ডকোষজনিত ব্যথার সূত্রপাতের আগে একটা প্রাথমিক উপসর্গ হিসাবে দেখা দিতে পারে।

৪। লালচে ভাব এবং স্থানীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধি

শুক্রাশয় বা অণ্ডকোষগুলির সংক্রমণ অথবা প্রদাহ (জ্বলন) অণ্ডথলি লালচে ভাবের দিকে নিয়ে যেতে পারে এবং ছুঁলে তাপমাত্রায় একটা বৃদ্ধি অনুভব করা যেতে পারে।

অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি

অণ্ডকোষ একজন মানুষের শরীরের সবচেয়ে সংবেদনশীল অঙ্গ গুলির মধ্যে একটি। কারণ অন্ডকোষ এর পুরো অঞ্চলটি স্নায়ু দিয়ে পরিপূর্ণ থাকে। অণ্ডকোষের ব্যথা হঠাৎ বেশি এবং হঠাৎ ব্যথা কমে যায়। এটি একটি খুব খারাপ অবস্থা হতে পারে কারণ এর অর্থ হতে পারে যে আপনার অণ্ডকোষে রক্ত চলাচল হচ্ছে না। 

অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি

অণ্ডকোষের ব্যথার সাধারণ কারণ হল অনেক সময় ধরে সাইকেল চালানো তবে অণ্ডকোষের ব্যথার অন্যান্য কারণ নির্ণয় করা কঠিন হতে পারে।  অণ্ডকোষ ব্যথার প্রধান কারণগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হল –

১। সংক্রমণ বা প্রদাহ 

অণ্ডকোষের প্রদাহ বা সংক্রমণের সাথে সবচেয়ে যে সাধারণ অবস্থাটি সম্পৃক্ত তা হলো এপিডি ডাইমাইটিস। এপিডি ডাইমিসে সংক্রমণ হলে সেই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে অণ্ডকোষে। এটা যেকোনো বয়সে হতে পারে এবং হঠাৎ হতে পারে। সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয় তরুণ ও যুবকদের। এ সংক্রমণের প্রধান কারণ হলো যৌনবাহিত ব্যাকটেরিয়া।

২। আঘাত

অণ্ডকোষের আঘাতজনিত ব্যথার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো স্পোর্টস ইনজুরি বা খেলাধুলাজনিত আঘাত। যদি আঘাত পাওয়ার পর ব্যথা এক ঘণ্টার বেশি স্থায়ী থাকে, তাহলে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

৩। অন্ডকোষে আঘাত

অন্ডকোষে আঘাত লাগার কারণে অন্ডকোষ ফুলে যায়। এই আঘাত লাগার সাধারণ কারণ হলো স্পোর্টস ইনজুরি বা খেলাধুলা করার সময় যে আঘাত লাগে সেটিকে বোঝায়।

৪। অণ্ডকোষে টিউমার

অণ্ডকোষের টিউমারগুলো সাধারণত ব্যথা ঘটায় না, তবে এটা সম্ভব। যেহেতু অণ্ডকোষের ব্যথা অল্পবয়সী পুরুষদের (১৮ থেকে ৩২ বছর বয়সের মধ্যে) বেশি হয়, তাই অণ্ডকোষে কোনো চাকা বা ফুলা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

৫। ইনগুইনাল হার্নিয়া

এ ক্ষেত্রে অন্ত্রের কিছু অংশ কুঁচকির মাঝামাঝি এক-দুই ইঞ্চি উপরে চলে আসে। কুঁচকির উপরটা গোল হয়ে ফুলে ওঠে, মাঝে মাঝে শক্ত ও ব্যথা হয়।

৬। শল্য চিকিৎসা

তলপেটের যেকোনো অপারেশনের কারণে (যেমন হার্নিয়া রিপেয়ার ও ভ্যাসেকটমি) অণ্ডকোষে সাময়িক ব্যথা হতে পারে ও অণ্ডকোষ ফুলে যেতে পারে।

৭। কিডনিতে পাথর

কিডনিতে পাথরের কারণে সাধারণত পেটে ব্যথা হয়, তবে ব্যথা অণ্ডকোষে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

৮। ফোলা ও অস্বস্তি

অণ্ডথলি এলাকায় বিভিন্ন কারণে ফোলা থেকে অস্বস্তি হতে পারে। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে ভ্যারিকোসিল, হাইড্রোসিল এবং স্পারম্যাটোসিল। যদি হাইড্রোসিল (অণ্ডকোষের দুই আবরণের মধ্যে অস্বাভাবিক পানি জমা) সংক্রমিত হয়, তা হলে সেখান থেকে এপিডিডাইমিসের প্রদাহ হতে পারে এবং এর ফলে অণ্ডকোষে ব্যথা হতে পারে।

৯। পুরুষাঙ্গ শক্ত হওয়া

যদি পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে ওঠে, কিন্তু বীর্যপাত না ঘটে তাহলে কখনো কখনো অণ্ডকোষে ব্যথা হতে পারে।

১০। হার্নিয়া

পুরুষের হার্নিয়ার সমস্যা হলেও অন্ডকোষ ফুলে যায়। এক্ষেত্রে অন্তরের কিছু কিছু অংশ এক থেকে দুই ইঞ্চি উপরে চলে আসে এর ফলে খুশকি উপরটা শক্ত হয়ে যায় এবং গোল হয়ে ফুলে যায় যার ফলে ব্যথা সৃষ্টি হয়.

১১। অন্ডকোষে প্যাচ লাগা

অন্ডকোষের নালীগুলোতে প্যাচ লাগার ফলেও অন্ডকোষ ফুলে যায়। এর ফলে অন্ডকোষে রক্ত সরবরাহে বাধার সৃষ্টি হয়। আপনারা চাইলে অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি জেনে নেওয়ার পাশাপাশি ভাঙ্গা মুখ ভরাট করার উপায় তা জেনে নিতে পারেন

বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি

বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারণ কি? এই প্রশ্নটি অনেক পুরুষের মনেই কখনো না কখনো জাগে। অন্ডকোষের ব্যথা কখনো কখনো অস্বস্তিকর এবং চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকেই ভাবেন, অন্ডকোষে ব্যথা হলেই তা গুরুতর কোনো সমস্যার লক্ষণ। কিন্তু সবসময় তা হয় না। 

বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি

তবে একে উপেক্ষা করাও উচিত নয়। আজকের এই ব্লগটিতে  আমরা জানবো, বাম অন্ডকোষে ব্যথার বিভিন্ন কারণ, কেন অন্ডকোষ ঝুলে যায় এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে।

একটি সাধারণ কারণ হতে পারে হাইড্রোসেল, যেখানে অন্ডকোষের আশপাশে তরল জমা হয়। এটি সাধারণত ব্যথাহীন হয়, তবে যদি এটি বড় হয় বা চাপ সৃষ্টি করে, তখন অস্বস্তি হতে পারে। 

আরেকটি সম্ভাব্য কারণ হল ভ্যারিকোসেল, যেখানে অন্ডকোষের রক্তনালীগুলো বিকৃত বা ফুলে যায়। এটি বেশ ব্যথা দিতে পারে এবং ওই অংশে ভারী বা টান টান লাগতে পারে। ভ্যারিকোসেলের কারণে প্রায়শই দীর্ঘমেয়াদী অস্বস্তি বা টান টান অনুভূতি হতে পারে, বিশেষ করে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে বা শারীরিক পরিশ্রম করলে।

স্ক্রোটাল কিস্টও হতে পারে অন্ডকোষের পাশে ছোট একটি মার্বেলের মতো গঠন তৈরি হওয়ার কারণ। এটি এক ধরনের তরল ভরা ছোট থলি যা সাধারণত ক্ষতিকর নয়, কিন্তু ব্যথা বা অস্বস্তি দিতে পারে যদি এটি বড় হয়ে যায় বা কোনো নার্ভের ওপর চাপ দেয়। 

কখনো কখনো, এই কিস্টগুলো নিজে থেকেই চলে যেতে পারে, কিন্তু অনেক সময় চিকিৎসা বা অপারেশন করতে হতে পারে যদি এটি সমস্যা সৃষ্টি করে।অন্ডকোষের ব্যথার অন্যতম সাধারণ আরেকটি কারণ হতে পারে কোনো ধরনের সংক্রমণ বা প্রদাহ। যখন অন্ডকোষে কোনো ইনফেকশন ঘটে, তখন অন্ডকোষ ফুলে যেতে পারে এবং তীব্র ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। 

এটি সাধারণত ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের কারণে হতে পারে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক বা অন্যান্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। সংক্রমণ বা প্রদাহের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে হঠাৎ করে ব্যথা বেড়ে যাওয়া, অন্ডকোষের ফোলা বা লাল হওয়া, এবং কখনও কখনও জ্বর হওয়া।

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা বা মানসিক চাপের কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা দেখা দিতে পারে, যা অনেক সময় অন্ডকোষের ব্যথারও কারণ হতে পারে। মানসিক চাপের ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা বা শরীরের পানির অভাব হলে এটি অন্ডকোষে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করা গুরুত্বপূর্ণ।

এমন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত, বিশেষ করে ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। তারা আপনার শারীরিক পরীক্ষা করতে পারবেন এবং প্রয়োজন হলে আলট্রাসনোগ্রামের মতো কিছু পরীক্ষা করতে পারেন, যা দিয়ে সমস্যার আসল কারণ জানা যাবে। কখনও কখনও, চিকিৎসক কিছু ওষুধ দিয়ে সমস্যা সমাধান করতে পারেন, আবার কখনও অপারেশন বা অন্য কোনো চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।

ব্যথা কমানোর জন্য ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা, ফিজিওথেরাপিস্টদের থেকে ফিজিওথেরাপি এবং প্রয়োজনীয় বিশেষ যত্ন নিলে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব। আপনার শারীরিক অবস্থা বা কোনো সমস্যাকে ছোট করে দেখা উচিত নয়। সমস্যাটি তত বেশি বাড়বে যত দেরি করবেন, তাই দ্রুত চিকিৎসা নিলে আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারবেন।

ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি

অনেক সময়, ডান অণ্ডকোষে ব্যথার পেছনে হার্নিয়া একটি বড় কারণ হতে পারে। ইনগুইনাল হার্নিয়া হলো এমন একটি অবস্থা, যেখানে পেটের ভেতরের কোনো অংশ অণ্ডকোষের মধ্যে চলে আসে, যার ফলে ডান অণ্ডকোষে তীব্র ব্যথা ও ফোলাভাব হতে পারে। হার্নিয়া হলে তা দ্রুত চিকিৎসা করা প্রয়োজন, কারণ এটি সময়মতো সমাধান না করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি

এছাড়াও, ডান অণ্ডকোষে মূত্রনালীর সংক্রমণ, প্রোস্টেটের প্রদাহ বা টেস্টিকুলার ক্যান্সারের মতো সমস্যার কারণেও ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে, যদি ডান অণ্ডকোষে ফোলাভাব বা কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

টেস্টিকুলার ক্যান্সার সাধারণত ব্যথাহীন হয়, তবে কিছুক্ষেত্রে এটি অস্বস্তি ও ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করলে চিকিৎসা সম্ভব হয়, তাই কোনো ধরনের অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা করা উচিত।

অণ্ডকোষের ব্যথা, বিশেষত ডান অণ্ডকোষে ব্যথা, অবহেলা করা উচিত নয়। এটি শারীরিক এবং মানসিক চাপের কারণ হতে পারে, তাই, অণ্ডকোষে ব্যথা হলে বা কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিলে, দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

১। এপিডিডাইমাইটিস এর কারণে 

বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি ও ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন কি তার মধ্যে একটি হল এপিডিডাইমাইটিস হল এপিডিডাইমিসের একটি সংক্রমণ এটি এমন একটি অঙ্গ যেখানে শুক্রাণু শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে পরিপক্ক হয়। এপিডিডাইমাইটিসের লক্ষণগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছেঃ

  • ব্যথা যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়
  • অণ্ডকোষের ব্যথার জায়গায় স্পর্শ করলে গরম অনুভব হয় 
  • ফোলা ভাব 
  • যৌনবাহিত সংক্রমণ যেমন ক্ল্যামাইডিয়া এবং গনোরিয়া এপিডিডাইমাইটিস হতে পারে। 
  • মূত্রনালীর সংক্রমণও এপিডিডাইমাইটিস হতে পারে।

২। কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণে

কিডনিতে পাথরের কারণে ব্যথা হতে পারে যা অণ্ডকোষে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যখন কিডনিতে পাথর হয় সেখানকার ব্যথার কারণে অন্ডকোষ এ ব্যথা হতে পারে। কিডনি পাথরের সাথে ব্যথা যুক্ত হতে পারে এমন অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছেঃ

  • প্রস্রাব এ রক্ত 
  • প্রস্রাব করার সময় জ্বালা পোড়া 
  • বমি বমি ভাব
  • লিঙ্গের ওপরে ব্যথা
  • ঘন ঘন প্রস্রাব করা
  • বমি হওয়া

অন্ডকোষ ব্যাথার ঔষধ দিয়েও যদি ভালো না হয় তাহলে অপারেশন করতে হতে পারে। আর তখন অন্ডকোষে ব্যাথা, জ্বর বা স্রাব হতে পারে তখন তাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অন্ডকোষ ব্যাথার চিকিৎসা করা উচিত।

৩। অর্কাইটিস এর কারণে

অর্কাইটিস হল অন্ডকোষের সংক্রমণ এবং ব্যথা। এপিডিডাইমাইটিস এর চিকিত্সা না করা হলে অর্কাইটিস হতে পারে। অর্কাইটিসের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছেঃ

  • ক্লান্তি
  • জ্বর
  • বমি বমি ভাব
  • টেস্টিকুলার ব্যথা
  • এক বা উভয় অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া

একজন ডাক্তার ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক লিখে দিতে পারেন। যখন কোনো ভাইরাস এর কারণে অর্কাইটিস হয় তখন তারা অন্যরকম ভাবে অন্ডকোষ ব্যাথার চিকিৎসা করে ।

অন্ডকোষে অতিরিক্ত ব্যথার কারণ এবং চিকিৎসা

নিচে বাম অন্ডকোষ ব্যাথার কারন ও প্রতিকার এবং ডান অন্ডকোষ ব্যাথার কারন ও প্রতিকার জানবো। কি কি কারণে অন্ডকোষ ব্যাথা হয় এবং অন্ডকোষ ব্যাথার ঔষধ কি কি খাওয়া যেতে পারে আপনারা কখন ডাক্তার এর কাছে যাবেন জানতে পড়ুন।

ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথিঃ ডায়াবেটিসের কারণে স্নায়ুর ক্ষতি হলে অণ্ডকোষে ব্যথা হতে পারে। ডায়াবেটিস এর নিয়ন্ত্রন করা অণ্ডকোষে ব্যথা সমাধান হতে পারে।

হাইড্রোসিলঃ এটি একটি তরল যা জমাট বেঁধে যায় ফলে অণ্ডকোষ ফুলে যায়। এগুলি সাধারণত শিশুদের বেশি হয় তবে যে কোনও বয়সের পুরুষদের এটা হতে পারে। যদিও এটাতে সাধারণত ব্যথা সৃষ্টি করে না তবে ফোলা থেকে কিছু ব্যথা হতে পারে। শিশুদের মধ্যে হাইড্রোসিল সাধারণত নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।

ইডিওপ্যাথিক টেস্টিকুলার পেইনঃ টেস্টিকুলার ব্যথা একটি অজানা কারণে হয়। চিকিত্সকরা অনেক পরীক্ষা করে এই রোগ নির্ণর করে।

মাম্পসঃ মাম্পসে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষই দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। যাইহোক বয়ঃসন্ধির পর মাম্পস হলে পুরুষরা অণ্ডকোষের ব্যথাতে ভুগতে থাকে।

স্ক্রোটাল ভরঃ স্ক্রোটাল ভরের কারণের উপর নির্ভর করে চিকিত্সা পরিবর্তিত হবে। অণ্ডকোষের কিছু কারণের মধ্যে রয়েছে এপিডিডাইমাইটিস এবং ক্যান্সার।

মূত্রনালীর সংক্রমণঃ ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ করে যার মধ্যে রয়েছে মূত্রনালী, মূত্রাশয় এবং কিডনি। সংক্রমণের একটি উপসর্গ হতে পারে টেস্টিকুলার ব্যথা। কখনও কখনও সংক্রমণ নিজেই ভালো হয়ে যেতে পারে, তবে খুব বেশি সমস্যা হলে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হতে পারে।

পিঠে ব্যথাঃ অন্ডকোষ এর ব্যথা পিঠে ব্যথা হওয়ার কারণে হয়ে থাকে। চিকিৎসার মাধ্যমে এটা ভালো হয়। আপনারা চাইলে অন্ডকোষে অতিরিক্ত ব্যথার কারণ এবং চিকিৎসা জেনে নেওয়ার পাশাপাশি ছুলি দূর করার উপায় জেনে নিতে পারেন।

অন্ডকোষ ব্যাথায় করণীয়

অন্ডকোষ ব্যাথা হলে সবার আগে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ব্যথা অল্প হলে বা তাৎক্ষণিক ডাক্তারের কাছে যেতে না পারলে যেসব ঘরোয়া চিকিৎসার সাহায্য নিবেন তা হলঃ

অন্ডকোষ ব্যাথায় করণীয়

  • বেশি হাটা চলা না করা, বিশ্রাম নেওয়া।
  • দুই হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করা কিংবা যেখানে ব্যাথা সেখানে গরম কিছু দিয়ে তাপ দেওয়া।
  • যদি অন্ডকোষ ফুলে থাকে তাহলে বরফ দিয়ে হালকা ঘষা দিতে পারেন। বরফ অন্ডকোষে কোন ধরনের তরল বা লিকুইড জমা হলে সেটা থেকে সাময়িক মুক্তি দিতে পারে।
  • ব্যাথার সময় ভারি কিছু বহন না করা।
  • টাইট underwear পড়তে পারেন, যদি এই ব্যাথা অন্ডকোষে বেশি নাড়াছাড়া খাওয়ার ফলে আসে তাহলে এথলেটিক underwear সাহায্য করতে পারে।

অন্ডকোষ ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা

তবে অন্ডকোষে ব্যাথার ঘরোয়া চিকিৎসা এই ব্যথা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। অন্ডকোষে ব্যাথা ঘরোয়া চিকিৎসা দেয়ার পর দেওয়ার কয়েক দিন পর যদি ব্যথা না কমে তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বরবর্ণ হতে হবে। তাহলে চলুন এ প্রশ্নের মাধ্যমে জেনে নিন অন্ডকোষ ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। নিম্নে অন্ডকোষ ব্যথা করা চিকিৎসা আলোচনা করা হলো-

অলিভ অয়েলঃ কয়েক ফোটা অলিভ অয়েল তেল নিন এবং তার সাথে একটা নারিকেল তেল এবং ৮ থেকে ১০ ফোঁটা মাছের তেল একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। উক্ত তেলগুলো মেশানো হয়ে গেলে মিশ্রিত তেল কয়েক ফোটা করে অন্ডকোষে আলতোভাবে লাগান। এভাবে আজ থেকে দশ দিন ব্যবহার করুন। দেখবেন অন্ডকোষ ফোলা ও ব্যথা কমে যাবে।

রসুনঃ আধা অথবা এক চা চামচ রসুন ও কয়েকটা নিমের পাতা পিষে পেস্ট করে নিন। তারপর সেই পেষ্টে এক টেবিল চামচ তিলের বীজের তেল ও একটু সামান্য পরিমাণ পেট্রোলিয়াম জেল নিন। এরপর সবগুলো উপাদান ভালোভাবে মিশে অন্ডকোষে হালকা করে লাগান। রাত্রে ঘুমানোর আগে এইভাবে তিন চারদিন লাগালে অন্ডকোষের ব্যথা থেকে অনেকটা খারাপ মিলবে।

পান পাতা ও মধুঃ একটা পরিষ্কার পানের পাতার উপর সামান্য পরিমাণ মধু মাখে নিন এরপর যে স্থানে ব্যথা অনুভব হচ্ছে সেখানে পাতাটি জড়িয়ে লাগিয়ে দিন। দিনে এভাবে তিন থেকে চার ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিন ব্যবহার করার পর দেখবেন অন্ডকোষে ব্যথা অনেকটা কমে গেছে।

কলার ফুলঃ একটি কল কয়েকদিন রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর শুকনো কলার ফুলটি গুঁড়ো করে পাউডার তৈরি করুন। এরপর এক লিটারের একটি ছোট পাত্রে পানি নিয়ে কলার ফুলের বানানো পাউডারটি পরিমাপ অনুযায়ী ১ চা চামচ নিয়ে পানির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।

এরপর একদিন ভিজিয়ে রাখুন এবং পরের দিন খালি পেটে সেবন করুন। চেষ্টা করবেন যে এই মিশ্রণটি যেদিন সেবন করবেন সেদিন অন্য কিছু না খাওয়ার। পরের দিন পারলে খাটি দুধ পান করুন। কলার ফুলের এই পাউডার আপনার অন্ডকোষের সংক্রমণ সারিয়ে তুওলতে সাথে সাহায্য করবে।

বরফ ব্যবহারঃ অন্ডকোষের ব্যাথার কারনে আপনি বরফের সেদ দিতে পারেন। বরফের সেদ দিলে অন্ডকোষের ব্যথা অল্প সময়ের জন্য অনেকটা কমে। আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত শেয়ার দিবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি ডাক্তারের চিকিৎসা নিতে পারছেন।

হলুদঃ ঘোলের সাথে এক চা চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার পান করুন। দেখবেন অন্ডকোষের ব্যথা কমতে শুরু করেছে।

অন্ডকোষে গুটি হওয়ার কারণ কি

প্রাথমিক অবস্থায় অণ্ডকোষে এই ছোট ছোট গুটি হলে তেমন কোন ব্যথা অনুভব হয় না। কিন্তু পরবর্তীতে দীর্ঘদিন হয়ে গেলে এই ছোট ছোট গুটিতে ইনফেকশন হয় এবং পেকে গিয়ে পুঁজের মতো দেখা যায়।

অন্ডকোষে গুটির কারণগুলো হলোঃ

  • সেবাসিয়াম গ্ল্যান্ডের ব্লক
  • লোমকূপ ফুলে যাওয়া
  • ত্বকে কোন প্রকারের আঘাত
  • পুরুষদের মাত্রাতিরিক্ত টেস্টোস্টেরোন হরমোন নিঃসরণ ইত্যাদি

অন্ডকোষে গুটির লক্ষণঃ

  • ছোট ছোট গুটি অন্ডকোষের ভন্ড থলিতে অনুভূত হবে
  • পরবর্তীতে এই গুটি গুলোর পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে
  • প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যথা না হলেও পরবর্তীতে ব্যথা হবে
  • অনেকের ক্ষেত্রে অন্ডকোষে চুলকানি হতে পারে
  • এই ছোট ছোট গুটি গুলো টিপলে সাদা আঠালো পানি বের হতে পারে

লেখকের শেষ মতামত

আমি এই পোস্টের একেবারে শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। এতক্ষণ আমি এই পোস্টের এর মাধ্যমে আপনাদের জানাতে চেষ্টা করেছি অন্ডকোষ ফুলে যাওয়ার কারণ ও অন্ডকোষ ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। আশা করি উক্ত আলোচনা থেকে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। 

রোগ বালাই যেমন আছে তেমনি তার চিকিৎসাও আছে। তাই অন্ডকোষ ফুলা ও ব্যথা অনুভূত হওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং ওষুধ সেবন করুন। তাহলে দ্রুত সুস্থতা অর্জন করবেন।

Atif Abdullah

Atif Abdullah is a passionate writer and expert in technology, Information and News. With years of experience in Information, he enjoys sharing insightful and well-researched content that helps readers stay informed. Atif has a keen interest in digital trends and his writing reflects his deep understanding and analytical approach.
Back to top button