গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা – ৩ মাসের গর্ভবতী লক্ষণ

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা – গর্ভধারণ একজন মেয়ের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময় আনন্দ, উদ্বেগ, শঙ্কা ইত্যাদি নানা অনুভূতি মিলে আচ্ছন্ন থাকে গর্ভবতী মায়ের মন। প্রথমদিকে কিছু বোঝা না গেলেও প্রথম তিন মাস সকল গর্ভবতী মায়ের কাছে ভীষণ অন্যরকম বলে মনে হয়।
নতুন প্রাণীর আগমনের সংবাদ আনন্দিত করে তুলে নতুন মায়ের জীবন। গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা এবং গর্ভাবস্থায় শেষ ৩ মাসের সতর্কতা সম্পর্কে ধারণা থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টা মায়ের জন্য নয়, সন্তানের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়।
এই সময় খুব সতর্কতার প্রয়োজন। এই সময়টা সন্তানের একদম প্রথম পর্যায়। তাই সময় মাকে হতে হবে অনেক বেশি সতর্ক। কিন্তু অনেক সময় মায়েরা বুঝতে পারে না এই সময় কি হচ্ছে এবং কি হতে পারে। অনেকের নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কেও সঠিক জ্ঞান থাকে না।
জানা থাকে না কি হবে গর্ভের সন্তানের যত্ন নিতে হয়। আজকের আলোচনা থেকে জানতে পারবেন, গর্ভবতী মায়ের প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা ও ৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা সম্পর্কে সঠিক ধারণা। তাহলে আসুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে প্রথমে ৩ মাসের গর্ভবতী লক্ষণগুলো জেনে নেই।
৩ মাসের গর্ভবতী লক্ষণ
একজন নারীর সবচে আনন্দের মুহূর্ত হলো মা হওয়ার খবর। প্রতিটি মেয়ের জীবন পরিপূর্ণ হয় সন্তান জন্ম দেওয়ার মাধ্যমে। একজন মেয়ে গর্ভবতী হওয়ার কিছু লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো সকলের জানা প্রয়োজন। একজন মেয়ের গর্ভবতী হওয়ার তিন মাসের মধ্যেই সকল লক্ষণ প্রকাশ পায়। নিম্নে, ৩ মাসের গর্ভবতী লক্ষণ তুলে ধরা হলো:
- মাসিক বন্ধ হওয়া।
- বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া।
- পায়ে খিল ধরা বা খিচুনি।
- সাদা স্রাব ভাঙ্গা।
- পিঠে এবং তলপাটে ব্যথা।
- মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকা।
- খাবারের প্রতি অনিহারা হয়।
- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা
গর্ভধারণ প্রতিটি নারীর জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়। একটা সন্তান জন্ম নিতে সময় লাগে ৯ মাস বা ৪০ সপ্তাহ। এই সময়টাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম তিন মাসকে প্রথম ত্রৈমাসিক বা ফার্স্ট ট্রাইমেস্টার বলা হয়। এই সময় গর্ভবতী মেয়েদের শরীরে নানারকম পরিবর্তন দেখা যায়।
এই সময় বমি বমি ভাব, ক্লান্তিবোধ, স্তনে ব্যাথা ও ভারি হওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া এবং খাবারের প্রতি অরুচি হওয়া হয়ে থাকে। গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাস সর্তকতা অবলম্বন করতে হয়। কারণ, গর্বের শিশুর সঠিক বিকাশ এর জন্য প্রথম তিন মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই তিন মাসেই শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন এবং বিকাশ ঘটে। বেশিরভাগ জন্মগত ত্রুটি এবং গর্ভপাত এই সময়ে হয়ে থাকে। তাই এই সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। এই সময় পুষ্টিকর খাবার খেতে হয়। তবে এই সময়ে চলাফেরা এবং খাওয়ার উপর সতর্কতা রাখতে হবে।
এই সময় কিছু কিছু খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রথম তিন মাস যেসব খাবার খাবেন না সেসব হল:
- প্রক্রিয়াজাত খাবার
- সামুদ্রিক খাবার
- পেঁপে
- আনারস
- কামরাঙ্গা
- অর্ধ সিদ্ধ মাংস
- অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার
- অতিরিক্ত লবণ
উপরে যেসব খাবারের কথা বলা হলো সেসব খাবার গর্ভকালীন সময় খাওয়া যাবে না। এসব খাবার খাওয়ার ফলে বাচ্চার বিকাশের সমস্যা হয় এবং অনেক সময় গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে। এই কারণে প্রথম তিন মাস এসব খাবার খাওয়া যাবে না। এই খাবারগুলো গর্ভকালীন অবস্থায় না খাওয়াই উত্তম।
গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের শারিরীক সর্তকতা
আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি এখন দুজন, আপনার শরীরের বেড়ে উঠছে আরেকটা আপনি, শেষ ট্রাইমেস্টারে শরীর জুড়ে শুরু হয় নানা অশান্তি তাই দ্বিতীয় আপনার ভালো থাকার জন্যে এই সময় শারীরিক নানা বিষয় সর্তক থাকতে হয়। যেমনঃ
১. এই সময় উঠা বসা অনেক কষ্টের। হতে পারে কোমড়, ঘাড় এবং জরায়ু নানা অস্বস্তি। তাই শোয়া-বসার নানা পজিশনে রাখতে হবে খেয়াল৷ এই সময় দীর্ঘক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসলে বা বিশেষ কোন পজিশনে বসলে পা ফুলে যেতে পারে, এর কারণ এই সময়টায় শরীরে অতিরিক্ত পানির সরবারাহ এবং হরমোনাল পরিবর্তন। তাই বসার ক্ষেত্রে থাকতে হবে সর্তক।
২. খুব বেশি সময় একটানা বসে না থেকে হাল্কা ব্যায়াম এবং হাঁটাহাঁটি করা উত্তম৷ এই সময় অনেকেই কাজ ছেড়ে দিয়ে পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে চান, তা না করে সাধারণ ফিজিক্যাল এক্টিভিটি রাখতে হবে।
৩. করতে হবে নিয়মিত ব্যায়াম। এছাড়া শোয়া থেকে উঠায় সমস্যার ক্ষেত্রে নিতে পারেন পরিবারের লোকজনের সহায়তা।
৪. এসময় ভারি কিছু কাজ এড়িয়ে যেতে হবে অবশ্যই। যেমন,ভারি কোন জিনিস উত্তলন, ধানমাড়াই, দীর্ঘক্ষণ কোন কাজে সময় দেয়া, দীর্ঘ ভ্রমণ ইত্যাদি।
৫. শেষ সময় ডাক্তার যে পরীক্ষা গুলো দিবে তা অবশ্যই করে রাখা ভালো। এসময় বাচ্চার পজিশন জানা এবং শারিরীক অবস্থা জানা জরুরি। তাই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে সময়মত।
গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের মানসিক সর্তকতা
গর্ভাবস্থায় শেষ ৩ মাসের সতর্কতা হিসেবে মানিসিক বিষয়টাকে এড়িয়ে যাবেন না কোনো ভাবেই। শেষ সময়টায় অর্থাৎ শেষ একমাস অনেকেরই মনে হয় এই গর্ভাবস্থা বুঝি আর শেষ হচ্ছে না,সারাজীবন ব্যাপি দীর্ঘ! তাই মানসিক ভাবে অনেকেই হয়ে যান খিটখিটে এবং হতাশ। এই সময় যা করতে হবেঃ
১. পরিবারের লোকজনের উচিত গর্ভবতী মায়ের যথেষ্ট খেয়াল রাখা এবং ভরসা দেয়া। গর্ভবতী কে উৎফুল্ল রাখা।
২. মায়ের নিজেরও উচিত মনবল না হারিয়ে সন্তানের আগমনের চিন্তা করে নিজের মানসিক দিকের খেয়াল রাখা। এর জন্যে যা কিছু মানসিক তৃপ্তি এনে দেয় তা করার চেষ্টা করা।
৩. অতিরিক্ত স্ট্রেস এর কারণে এবং শারিরীক অস্বস্তির কারণে ঘুম কমে যায়,যা এই সময়টা প্রবল হয়। এই সমস্যা যাতে সন্তানের উপর প্রভাব ফেলতে না পারে তাই সর্তকতার সাথে দুঃশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকতে হবে। আপনার মানসিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলে এমন ব্যাপার এড়িয়ে যেতে হবে।
গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা জেনে নেওয়ার পাশাপাশি আপনারা চাইলে গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়ার কারণ বিস্তারিত আমাদের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন খুব সহজেই।
৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভকালীন সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম তিন মাস। এই সময় বাচ্চার সার্বিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠন এবং বিকাশ ঘটে। বেশিরভাগ জন্মগত ত্রুটি এবং গর্ভপাত এই সময় হয়ে থাকে। বিশেষ করে এই সমস্যা গুলি হয়ে থাকে খাবারের কারণে। এই কারণে এই সময় প্রয়োজন সঠিক খাদ্য তালিকা। ৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা নিম্নে তুলে ধরা হলো:
যেসব খাবার খাবেন:
- দুধ ও দুধ দিয়ে তৈরি খাবার। যেমন দই, পনির ,মাখন ইত্যাদি।
- গার্লস সবুজ শাকসবজি। যেমন পালং শাক, মটরশুঁটি, বাঁধাকপি, ঢেঁড়স ইত্যাদি
- ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার।
- শস্য দানা।
- ডিম, মাছ, মাংস, বিভিন্ন শস্য বীজ ও বাদাম
- আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
- ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার
- প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার
- ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
- স্টার্চ জাতীয় খাবার
উপরের যেসব খাবারের কথা উল্লেখ করা হলো এসব গর্ভ অবস্থায় গেলে বাচ্চার সঠিক বিকাশ ঘটবে। এই সময়টা চাই বাচ্চার সঠিক পুষ্টির প্রয়োজন।
যেসব খাবার খাবেন না
- প্রক্রিয়াজাত খাবার
- সামুদ্রিক খাবার
- পেঁপে
- আনারস
- কামরাঙ্গা
- অর্ধ সিদ্ধ মাংস
- অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার
- অতিরিক্ত লবণ
এসব সব খাবার গর্বের বাচ্চার ক্ষতি করে। বিশেষ করে এসব খাবার খেলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে। এই কারণে এসব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা
গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টিকর খাবার খেতে হয়। কারণ, মায়ের খাবারের মাধ্যমে বাচ্চা খাবার খেয়ে থাকে।, এই সময় পুষ্টিকর খাবার খেলে মা ও শিশু দুজনেই ভালো থাকার। এবং গর্ভের বাচ্চার সঠিক বিকাশ ঘটে। এসব দিক লক্ষ রেখে গর্ভবতী অবস্থা হয় মাকে বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খেতে হয়।
পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে অন্যতম ফল। ফলে প্রায় সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে। চলুন জেনে নেই গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের ফল খাওয়ার তালিকা:
- পেয়ারা
- কমলাৎ
- কলা
- আপেল
- খেজুর
- ডালিম
- বেদনা
উপরে যে সব ফলের কথা বলা হলো এসব ফলে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি রয়েছে। এসব খাবার খেলে মা ও বাচ্চা উভয়ই সুস্থ থাকবে। কিন্তু এসব ফল খাওয়ানোর আগে অবশ্যই ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন ফলগুলো হিমায়িত না হয়। এবং কোন ফলে অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া যাবে না। এতে করে ফলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কম কম করে দিনে অনেকবার খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় শেষ ৩ মাসের খাবার তালিকা
দৈনিক একজন মহিলার ২২০০ ক্যালরি খাবারের প্রয়োজন হয় কিন্তু গর্ভকালীন সময়ে আরো কমপক্ষে ২০০-৩০০ ক্যালরি খাবার বেশি খেতে হয়। শেষ সময়টা শরীরের উপর চাপ বেশি থাকে তাই খেয়াল রাখতে হবে আরো বেশি। গর্ভাবস্থায় শেষ ৩ মাসের সতর্কতা হিসেবে খেতে হবে নিম্নোক্ত পুষ্টিকর খাবারঃ
- এই সময় শুকনো খেজুর, বাদাম জাতীয় ড্রাইফ্রুট বাড়তি ক্যালরির জোগান দেয়।
- আয়রনের জন্যে খেতে পারে কলা,হাড়ের মজ্জা, ডাবের মত আয়রন সমৃদ্ধ খাবার।
- শেষ সপ্তাহ গুলোতে পানির প্রতি হতে হবে বিশেষ মনোযোগী। এই সময় প্রচুর পানি পান করতে হবে।
- প্রসবকালীন সময়ের আগে অনেকের দেখা দেয় কোষ্ঠকাঠিন্য, তাই প্রচুর পানি পান করার সাথে সাথে হালকা কুসুম গরম পানিতে সামান্য আদা দিয়ে খেলে উপকার হয় বেশ।
- এছাড়া শাকসবজি ও আঁশজাতীয় খাবার এই অবস্থায় সব থেকে বেশি খাওয়া প্রয়োজন, এর ফলে সন্তানের উপযোগী পুষ্টি যেমন আসবে তেমনি মুক্তি পাওয়া যাবে গর্ভকালীন নানা জটিলতা থেকে।
মাতৃত্ব পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অনুভূতি ও দায়িত্বের নাম। সন্তান গর্ভে আসার পর থেকে প্রসব পর্যন্ত তাই মা ও পরিবারকে থাকতে হয় সর্বোচ্চ সর্তক। কারণ সামান্যতম ভুলের জন্যে হয়ে যেতে পারে মা ও সন্তানের বড় কোন সমস্যা। গর্ভাবস্থায় শেষ ৩ (তিন) মাসের সতর্কতা ও খাবার তালিকা সম্পর্কে আপনি অবশ্যই জ্ঞাত থাকা প্রয়োজন।
মূলত গর্ভকালীন সময় কে তিন ভাগ করা হয়, শেষ ২৮ সপ্তাহ থেকে প্রসবকালীন সময় পর্যন্ত সময়কে তৃতীয় ট্রাইমেস্টার বলা হয়। এই সময় যে সর্তকতা অবলম্বন করতে হয় তা হলোঃ
গর্ভাবস্থায় শেষ ৩ মাসের সতর্কতা
গর্ভাবস্থায় শেষ ৩ মাসে খাবার, শারীরিক এবং মানসিক সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যান্ত জরুরী । এই সময়ের মধ্যে কোন ধরণের খাবার খাওয়া প্রয়োজন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এই ব্লগে। ব্লগটি (Caution for the last 3 months of pregnancy) শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দৈর্য্য সহকারে পড়ার জন্য অনুরোধ রইলো।
গর্ভাবস্থায় খাবারের সর্তকতা
গর্ভাবস্থায় শেষ ৩ মাসের সতর্কতা সম্পর্কে বলতে গেলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে এ বিষয়ে অবশ্যই আলোচনা আসে। পুরো গর্ভকালীন সময়ে খাবার নিয়ে থাকতে হয় সর্তক,কারণ যে কোন খাবার নয় বরং পুষ্টিকর এবং ঝুঁকিহীন খাবারই দিতে পারে সুস্থ মা ও সুস্থ সন্তানের নিশ্চয়তা। শেষ সময়ে তাই আরো বেশি সর্তকতা মানতে হয়, এই সময় যে যে খাবার এড়িয়ে যাবেন-
গর্ভাবস্থায় যে ধরণের খাবার খাওয়া উচিৎ নয়
- চা-কফি ক্যাফেইন জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো। কারণ শেষ সময়টায় ঘুম কমে যায়,ক্যাফেইনের ফলে মা আরো জেগে থাকতে পারেন যার কারণে সন্তানের ওজনের তারতম্য হতে পারে।
- অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে যেতে হবে,কেননা গর্ভকালীন সময় হতে পারে ডায়াবেটিস , যা পরবর্তীতে স্থায়ী ডায়াবেটিস এর কারণ হতে পারে।
- লবণের ব্যাপারে হতে হবে সর্তক, কারণ উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি গর্ভাবস্থার শেষ সময়ে বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া পায়ে পানি আসার কারণও হতে পারে অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার।
- এসময় এড়িয়ে যেতে হবে তৈলাক্ত খাবার ও ফাস্টফুড। এতে মায়ের ওজন বেড়ে যেতে পারে হতে পারে পেটে গ্যাসের সমস্যা৷
- পুরো গর্ভকালীন সময়ে বিশেষ কিছু ফল কম খাওয়া বা না খাওয়াই ভালো। যেমনঃ কামরাঙা, আনারস এবং পেঁপে। এসব ফলে এমন কিছু এনজাইম বিদ্যমান যা হতে পারে ভ্রণের জন্যে ক্ষতির কারণ।
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের জন্যে অবশ্যই ব্যবস্থা করতে হবে পর্যাপ্ত ক্যালরিপূর্ণ খাবার এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। গর্ভাবস্থায় শেষ ৩ মাসের সতর্কতা জেনে নেওয়ার পাশাপাশি আপনারা চাইলে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না তা বিস্তারিত আমাদের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন খুব সহজেই।
পেটে বাচ্চা থাকলে কি কি ফল খাওয়া উচিত নয়?
গর্ব অবস্থায় মেয়েদের অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। বিশেষ করে চলাফেরা ও খাবার দিকে লক্ষ্য রাখতে হয়। একটু ভুলের জন্য অনেক বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই সময় কিছু কিছু ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। নিয়মে ফলগুলোর নাম তুলে ধরা হলো:
- আনারস
- পেঁপে
- আঙ্গুর
- হিমায়িত ফল
আনারস: আনারস টক মিষ্টি ফল। এতে রয়েছে ব্রোমেলাইন নামক উপাদান। যা জরায়ুর পথকে কোমল করে যার ফলে প্রারম্ভিক ব্যথা সৃষ্টি হয়। আনরাস খাওয়ায় গর্ভাবস্থায় ডায়রিয়ার হতে পারে। আনারস খাওয়ার ফলে অনেক সময় গর্ভপাত হয়ে থাকে।
পেঁপে: আধা পাকা পেঁপেতে রয়েছে ল্যাটেক্স। ল্যাটেক্স গর্ভপাতের জন্য দায়ী। পেঁপে খাওয়ার ফলে পেট ব্যাথা করে এবং গর্ভের সন্তানের ক্ষতি করে। এ কারণে এই সময় পেতে না খাওয়াই ভালো।
আঙ্গুর: আঙ্গুর একটি পুষ্টিকর খাবার। তবে গর্ভবতী মেয়েদের আঙ্গুর খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে শেষের তিন মাস। আঙ্গুরে থাকা রেসভেরাট্রল নামক যৌগ হরমোনের ভারসাম্যহীনতা করে তুলে। এছাড়াও আঙ্গুরে রয়েছে তাপ উৎপাদন কারী পদার্থ যা মা ও শিশুর ক্ষতির কারণ হতে পারে।
হিমায়িত ফল: ফল হিমায়িত করে অনেকদিন যাবত সংরক্ষণ করা হয়। এতে করে ফলের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ করে। গর্ভবতী অবস্থায় এসব ফল খেলে মা ও শিশুর দুজনেই অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ কারণে গর্ভ অবস্থায় হিমায়িত ফল খাওয়া পরিহার করতে হবে।
লেখকের শেষ মতামত
সর্বপরি সুস্থ মা এবং সুস্থ সন্তানের জন্যে শুধু শেষ ৩ মাসই কেবল নয়,পুরো গর্ভকালীন সময়ে থাকতে হবে শরীর ও মনের প্রতি সর্বোচ্চ যত্নশীল। তাহলেই কেবল আমরা পাবো সুস্থ মা ও সুস্থ সন্তান। প্রতিটা মানুষের জীবনের স্বপ্ন থাকে বাবা মা হওয়ার। বাবা না হওয়ার ফলে প্রতিটা মানুষের জীবন সম্পন্ন হয়।
বাবা মা হওয়ার জন্য বেশি কষ্টের সম্মুখীন হতে হয় মাকে। এই কারণে মাকে অনেক ধরনের সতর্কতা অবলম্বন। বিশেষ করে, গর্ভবতী হওয়ার তিন মাস সময় পর্যন্ত। এই সময় একটু ভুলের কারণে অনেক বড় ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। এইজন্য গর্ভবতী অবস্থায় তিন মাসের লক্ষণ এবং কি করনীয় সকল কিছু বিষয় ধারণা থাকা প্রয়োজন।
পরিশেষে বলতে চাই প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা নিয়ে একদমই অবহেলা করবেন না। আমরা উপরে যেগুলো সতর্কতা উল্লেখ করে দিয়েছি সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেন তাহলে দেখবেন আপনার গর্ভাকালীন সময়ের বিভিন্ন সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন।