কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো | কিডনির পয়েন্ট বেড়ে গেলে কি করনীয়

কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো – শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হচ্ছে কিডনি। মেরুদন্ডী প্রাণীদেহের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ, যা রেচনতন্ত্রের প্রধান অংশ। এর প্রধান কাজ হচ্ছে রক্তকে ছেঁকে বর্জ্য পদার্থ, যথা মূত্র উৎপাদন করা ও ইউরিয়া পৃথকীকরণ করা।
দিনে ৪০ বার বৃক্কের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় মানুষের শরীরের সব রক্ত। এই গুরুত্বপূর্ণ কিডনির প্রতি অবশ্যই আমাদের যত্নশীল হওয়া উচিত এবং মানব দেহের কিডনি অথবা অন্যান্য অঙ্গ সম্বন্ধে সাময়িক কিছু ধারনা থাকা উচিত।
কিডনির পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয়, এটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দিন দিন মানুষের শরীরের মধ্যে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এটা বেড়ে যাওয়ার ফলে অনেক জটিলতার দেখা দেয়, তখন ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য হয়ে পড়ে। আসুন এখন জেনে নেয়া যাক, কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো?
ডায়ালাইসিস করলে কি কিডনি ভালো হয়
ডায়ালাইসিস করলে কি কিডনি অনেকাংশ ভালো হয়। কিডনি রোগের অসংখ্য রোগী ডায়ালাইসিস এর দ্বারা অনেক উপকৃত হয়। আপনার শরীরে কিডনি যখন ব্যর্থ হয়, শরীরের প্রয়োজনীয়তার যত্ন নিতে অক্ষম হয়ে যায়, তখনই কিডনির ভালোর জন্য ডায়ালাইসিস এর প্রয়োজন পড়ে।
📌আরো পড়ুন 👇
ডায়ালাইসিস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পটাশিয়াম, সোডিয়াম এগুলোর মত নির্দিষ্ট ইলেক্ট্রোলাইটের যথাযথ স্তর বজায় রাখতে নিশ্চিত করে।
কিডনি রোগীর শরীর থেকে বর্জ্য, অতিরিক্ত তরল ও লবন অপসারণ করে। একজন সুস্থ মানুষের দুইটি কিডনি প্রতিদিন দেড় হাজার লিটার রক্ত (রক্ত ২৪ ঘণ্টা কিডনির ভেতর দিয়ে বারবার যায় বলে রক্তের মোট পরিমাণ এত বেশি) পরিশোধন এর কাজ করে। কিডনি যদি মানুষের শরীরের রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে না দিত, তবে কখনোই মানুষ বাঁচতে পারত না।
যখন কিডনি এই রক্ত পরিশোধনের কাজ করতে না পারে, তখন ক্ষতিকর বর্জ্য রক্তে জমা হতে থাকে। দিন দিন এই পদার্থের পরিমাণ যদি বেড়ে যায়, তবে রোগী কোমায় চলে যেতে পারেন এমনকি মৃত্যুবরণও করতে পারেন। তাই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে অবশ্যই ডায়ালাইসিস অপরিহার্য হয়ে পড়ে।
কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো
রক্তে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রার ওপর নির্ভর করে আমাদের কিডনি ভালো আছে কি না তা পরীক্ষা করা হয়। এক্ষেত্রে বয়সের বিষয়ও লক্ষ করা যায়। এখন চলুন জেনে নেই বয়স অনুযায়ী আমাদের রক্তে ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা কত থাকলে কিডনি ভালো আছে কি না তা সম্পর্কে জেনে নেই।
- স্বাভাবিক পুরুষের ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ০.৬-১.৬ মিলিগ্রাম হয়।
- স্বাভাবিক নারীর ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ০.৫-১.২ মিলিগ্রাম হয়।
- শিশুদের ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ০.৩-০.৭ মিলিগ্রাম হয়।
- কিশোরদের ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ০.৫-১.০ মিলিগ্রাম হয়।
- কিডনি নেই এমন ব্যক্তিদের দেহে প্রতি ডেসিলিটারে ১.৮ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ক্রিয়েটিনিন থাকতে পারে।
কিডনির পয়েন্ট এগুলোর মধ্যে থাকলেই বুঝতে পারবেন কিডনি ভালো এবং সুস্থ রয়েছে। কিন্তু তারপরও ক্রিয়েটিনিনের স্বাভাবিক মাত্রায় অনেকটা পরিবর্তনশীল বিষয় রয়েছে এবং কিডনির পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয় এটা জেনে রাখাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
কিডনির পয়েন্ট কত হলে ডায়ালাইসিস করতে হয়
ক্রিয়েটিনিন হলো একটি বর্জ্য পদার্থ যা আমাদের শরীরের পেশী থেকে তৈরি হয়। চিকিৎসকদের মতে ক্রিয়েটিনিন সাধারনত ২.০ এর উপরে গেলে কিডনির কোষগুলো আস্তে আস্তে মারা যেতে শুরু করে। মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর শরীরে শারীরিক পরিবর্তনের ফলে যে বর্জ্য পদার্থ তৈরী হয় তা শরীর থেকে বের করে দেওয়ার জন্য ছাঁকনি হিসেবে কিডনি কাজ করে থাকে।
কিডনি শরীরে প্রবাহিত সমস্ত রক্ত ছেকে পানির সাথে মিশিয়ে প্রসাবের মাধ্যমে শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়। ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কত তা রক্তের মাধ্যমে কিডনির ফলাফল নির্দেশ করে।
যারা প্রাপ্তবয়স্ক রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিন এর স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে মূলত ০.৬ থেকে ১.৮ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার (mg/dL)। এই মাত্রাটি ২.৪ কিংবা তার বেশি হলে সেটা কিডনি রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। সুতরাং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ৭.০ কিংবা তার বেশি হলে কিডনি রোগের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে ধরে নেওয়া হয়।
এই পর্যায়ে কিডনি রক্ত থেকে আর বর্জ্য পদার্থ ছেঁকে বের করতে পারে না। ফলে রোগীর জীবন রক্ষার জন্য ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন করার প্রয়োজন হয়। তবে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ৭.০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার বা তার বেশি হলেই অবশ্যই ডায়ালাইসিস করতে হবে।
অনেকেরই ভুল ধারণা আছে,যে একটা রোগীকে একবার ডায়ালাইসিস করানো হলে সেই রোগীকে আর বাঁচানো যায় না বা রোগী বাঁচে না তবে নিয়মিত ডায়ালাইসিস করানোর ফলে রোগী সুস্থ থাকে। তবে যারা অনিয়মিত ডায়ালাইসিস করেন, তাদের বিভিন্ন রকমের শারীরিক জটিলতা বেড়ে যেতে পারে।
যেমন- ক্ষুধামন্দা, রক্তস্বল্পতা, শ্বাসকষ্ট, শরীর ফুলে যাওয়া, মুখ চোখ এবং হাতে-পায়ে রস ধরা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। ডাক্তাররা রোগির বয়স দেখে, রোগীর শারিরীক অবস্থা দেখে এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ৭ এর উপরে গেলেই ডায়ালাইসিস করতে বলেন। ডায়ালাইসিস করার সিদ্ধান্ত রোগীর অন্যান্য শারীরিক অবস্থা, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ ইত্যাদির উপর নির্ভর করে।
শিশুদের ক্ষেত্রে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বয়স এবং শরীরের ওজন অনুসারে পরিবর্তিত হয়। সাধারণত, ১ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে সিরাম ক্রিয়েটিনিনের স্বাভাবিক মাত্রা ০.৪ থেকে ১.৪ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার, ১ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ০.৫ থেকে ১.৮ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সী কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে ০.৬ থেকে ১.৮ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার এর মধ্যে থাকে।
সুতরাং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ৭.০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার বা তার বেশি হলে তা কিডনি রোগের শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে ধরে নেওয়া হয়। কোন কারণে কিডনি নষ্ট হলে কিডনির পরিবর্তে কৃত্রিম ছাঁকনি ব্যবহার করে তার মধ্যে দিয়ে শরীরে প্রবাহিত সমস্ত রক্ত ছেঁকে শরীর থেকে বর্জ্য বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে চিকিৎসা শাস্ত্রে বলা হয় ডায়ালাইসিস এবং যে কৃত্রিম ছাঁকনি দিয়ে এ ছাঁকন প্রক্রিয়া করা হয় তাকে বলা হয় ডায়ালাইজার।
সর্বোপরি এ ব্যাপারে কিডনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তবে ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাবে এই রকম খাবার খাওয়া থেকে রোগীকে বিরত থাকতে হবে। এবং কিছু বিধি নিষেধ আছে সেগুলো মেনে চললে ক্রমাগত ক্রিয়েটিনিন বাড়ার গতিটা কমবে আশা করে যায়।
ডায়ালাইসিস করতে কত টাকা লাগে
কিডনি যখন অতিমাত্রায় বিকল হয়ে পড়ে, তখন প্রয়োজন পড়ে ডায়ালাইসিসের। ডায়ালাইসিস করতে গিয়ে অনেকে জানতে চান আসলে ডায়ালাইসিস করতে কত টাকা লাগে বা লাগবে?
📌আরো পড়ুন 👇
সরকারি হাসপাতাল গুলোতে ডায়ালাইসিস এর জন্য ১,৫০০ থেকে ২,০০০ বা তার একটু কমবেশি হতে পারে। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ডায়ালাইসিস এর ফি অনেক বেশি। অনেক বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিসের ফি প্রায় ৮ হাজার থেকে শুরু করে অন্যান্য খরচ সহ বেশ মোটা অংক এসে দাঁড়ায়।
কিডনি টেস্ট খরচ কত
কিডনী পরীক্ষার খরচ বিভিন্ন দেশ এবং চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর করে এবং আরও কিছু ফ্যাক্টরের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তন করতে পারে। পরীক্ষার ধরণ, অবস্থান, পরীক্ষার কর্মীর মূল্য এবং অন্যান্য পরিবেশনার উপর নির্ভর করে খরচের পরিমাণ পরিবর্তন করতে পারে।
সাধারণত বাংলাদেশে, কিডনী পরীক্ষার খরচ ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। কিছু স্পেশালাইজড পরীক্ষার যেমন বিপিএল স্ক্যান (Biopsy) বা ম্রিয়ার খরচ বেশী হতে পারে। একটি কিডনী পরীক্ষা করতে যদি আপনার প্রয়োজন হয়, তাহলে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আপনি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করে পরীক্ষার মূল্যের সম্ভাব্য খরচ জানে নিতে পারেন। তারা আপনাকে খরচের সম্ভাব্য পরিমাণ বলে দিতে পারবেন।
কিডনির পয়েন্ট বেড়ে গেলে কি করনীয়
ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে কিডনি ঠিকমত কাজ করছে না। ক্রিয়েটিনিন কমানোর কোনো ওষুধ নাই। মূলত কিছু বিশেষ রোগ হলে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যায়। যেসব রোগের কারনে ক্রিয়েটিনিন বাড়ে সেসব রোগের চিকিৎসা করালেই ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
এজন্য ক্রিয়েটিনিন বেড়ে গেলে আগে সংশ্লিষ্ট রোগের চিকিৎসা করাতে হবে। যেমন —
সাধারণ নির্দেশিকা
- সব ধরনের ফল দেয়া যাবে না।
- কাঁচা জিনিস, সালাদ খাওয়া যাবে না।
- সোডিয়াম,পটাশিয়াম খুব কম গ্রহণ করতে হবে।
- কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণটা বাড়িয়ে দিতে হবে।
- টমেটোর মাংসল অংশটা দেয়া যাবে কিন্তু তরল পানি অংশটা দেয়া যাবে না।
- প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকায় কলা ও ডাবের পানি দেয়া বিরত থাকতে হবে।
- পেঁপে একেবারেই দেয়া ঠিক না এতে ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে।
- ক্রিয়েটিনিন মাত্রা বেড়ে গেলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই ৫-৭ গ্লাস এর বেশি পানি পান করা যাবে না।
- খই কার্ব জাতীয় হওয়ায় এটি অসম্ভব ভালো কাজ করে। ভুট্টা, পপকর্ণ এগুলোও ভালো কাজ করে
- আঁশ জাতীয় কিছু খাবার দেয়া যাবে না অর্থাৎ শাক,লালচাল,লালআটা গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
যেসব খাবার গ্রহণ করা যেতে পারে যেমন — গরুর দুধ, স্কিমড মিল্ক, দই, বেরি জাতীয় ফল, লাল আঙ্গুর, লাল ক্যাপসিকাম।
সবজি এর ক্ষেত্রে সব ধরনের সবজিই খেতে পারবেন কোন নিষেধাজ্ঞা নেই কিন্তু ভাপ দিয়ে পানি ঝরিয়ে নিয়ে তারপর খেতে দিতে হবে।
যদি ক্রিয়েটিনিন এর মাত্রা অনেক বেশি থাকে তখন অবশ্যই চর্বি জাতীয় খাবার সীমিত গ্রহণ করতে হবে কিন্তু, PUFA (এক প্রকার ফ্যাটি এ্যসিড– আখরোট, সানফ্লাওয়ার তেল এ থাকে) হতে হবে।
মিষ্টি কুমড়ার শক্ত সবুজাভ অংশ, গাজরের মাঝের নরম অংশ, লবণাক্ত আচার, পনির, নুডলস মিক্স, পাস্তা, লবণাক্ত বা টিনজাত মাংস, খাবার সোডা, ক্যাফেইনযুক্ত খাবার থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
কোন প্রকার চা খাওয়া মোটেও ঠিক নয় এইক্ষেত্রে চা পান করার ফলে কিডনির কার্যকলাপ বেড়ে গিয়ে শরীরের প্রয়োজনীয় পানিও বেড়িয়ে যায়। এ কারণে একেবারেই এড়িয়ে চলা উত্তম।
প্রতিটি খাবারের বিকল্প খুঁজে বের করা প্রয়োজন। রোগীদের জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাসের সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে ডায়েট দিতে হবে, তবেই ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কমানো সম্ভব। যেসকল রোগী বা যাদের ক্রিয়েটিনিন লেভেল বেশি তাদের অবশ্যই জীবনযাত্রার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসের সামঞ্জস্যতা থাকা প্রয়োজন।
সেক্ষেত্রে পুষ্টিবিদ ও ডায়েটিশিয়ান এর পরামর্শ গ্রহণ অবশ্যই জরুরী। উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছেন যে কিডনির পয়েন্ট বেড়ে গেলে কি কি রোগের চিকিৎসা করতে হবে এবং কি কি খাবার খাওয়াতে হবে কি পরিমানে এবং কি কি খাওয়াবেন না।
কিডনিকে সুস্থ রাখতে কী কী করতে হবে
সুস্থ জীবনযাপনের জন্য সচেতনতা ও শরীর চর্চার মাধ্যমে কিডনি রোগের ৬০ ভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। মানবদেহে ছাঁকনির কাজ করে কিডনি, রক্ত থেকে বজ্রকে ছেঁকে এনে প্রস্রাবের মাধ্যমে তা বের করে। তাছাড়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, লোহিত রক্তকণিকা তৈরীতে অনেকাংশ সাহায্য করে। শরীরের সব হারকে সুস্থ রাখে, কিডনিকে সুস্থ রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- পরিমিত পানি পান করুন
- ধূমপান বন্ধ করুন
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করুন
- উচ্চ ঝুঁকি থাকাকালীন নিয়মিত কিডনি পরিক্ষা করুন
- ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক বা ব্যাথানাশক ঔষধ থেকে বিরত থাকুন।
কিডনিকে সুস্থ রাখতে খাদ্যাভাসের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। খাবারের মধ্যে পরিমিত লবন ব্যবহার করবেন, কোনো ভাবেই কাঁচা লবন খাওয়া যাবে না। তাজা ফল ও সবুজ শাকসবজি বেশি পরিমাণে খেতে হবে। পরিমিত পানি পান করবেন এতে ইউরিয়া, সোডিয়াম ও বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কার করতে কিডনিকে সাহায্য করে। দৈনন্দিন জীবনে নিয়মিত এই সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললেই আমরা কিডনির সমস্যা থেকে দূরে থাকবো।
লেখকের শেষ মতামত
কিডনি জনিত কোন সমস্যার লক্ষণ দেখলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করে নেন। কিডনি রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষাটি করতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যেই হয়ে যায় এবং কিছু উপায়ও ফলো করতে পারেন, যেমন: যারা প্রতিদিন বসে থাকার কাজ করেন তারা অন্তত দিনে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করবেন।
পুরো একটা দিন ফিট থাকতে হলে সকালে সকালে আধাঘন্টা জোরে হাঁটুন। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার, চিনি, ভাজাপোড়া, ধূমপান থেকে বিরত থাকুন। স্বাস্থ্য সচেতন থাকুন, তবেই সুস্থ থাকবেন, কিডনি নানারকম সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন। যেকোন রোগ বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যদি সময় মত পরিচালনা না করেন, তাহলে আপনার জীবনে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এই ছিল আজকের কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো সম্পর্কিত সকল তথ্য। এখানে সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকি।
তো বন্ধু আশা করছি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো এবং কিডনির পয়েন্ট বেড়ে গেলে কি করনীয় নিয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও কিডনির পয়েন্ট কত হলে ভালো এবং কিডনির পয়েন্ট বেড়ে গেলে কি করনীয় সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ।