Health

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কি – গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি হয়

গর্ভকালীন সময় প্রত্যেক নারীর জীবনেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই সময় সবারই উচিত নিজের ডায়েটের দিকে নজর রাখা। এই সময়ে অস্বাস্থ্যকর ডায়েট মা এবং শিশুর উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। তাই নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় সুষম ডায়েটের মধ্যে অবশ্যই বিভিন্ন প্রকারের ফল অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায় ফলের মধ্যে তরমুজ খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি, ভিটামিন সি, এ, বি কমপ্লেক্স, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম। এছাড়াও এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় তরমুজ গর্ভবতী নারীদের জন্য একটি আদর্শ ও স্বাস্থ্যকর খাবার। এখন প্রশ্ন হল,  গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি হয়? এটা আসলে অনেকের মধ্যে তাড়না জাগায়। 

এই সন্দেহ দূর করার জন্য আমরা গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিচ্ছি। এই তথ্যের মাধ্যমে, আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কি না। আসুন, প্রথমেই আমরা এই প্রশ্নের উত্তর জেনে নেই।

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কি

প্রত্যেক নারীর গর্ভকালীন সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই সময় উচিত নিজের দিকে মনোযোগ ও খেয়াল রাখা। এ সময় মায়ের অস্বাস্থ্যকর খাবার বা ডায়েট করলে শিশুর উপর খারাপ প্রভাব পড়ে। এজন্য প্রত্যেক গর্ভকালীন মাকে নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি গর্ভ অবস্থায় ডায়েটের মধ্যে অবশ্যই বিভিন্ন প্রকার ফল অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। 

চিকিৎসকের মতে তরমুজ খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তরমুজ আছে ৯২ ভাগ পানি, ভিটামিন সি, এ, বি কমপ্লেক্স, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম। এছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমান ফাইবার, ভিটামিন বি ৬। গর্ভকালীন অবস্থায় নারীদের তরমুজ খাওয়া অত্যন্ত পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর খাবার। এছাড়াও গর্ভবতীদের জন্য সকালের খাবার হিসেবে একবাটি তরমুজ বা এক গ্লাস রস অত্যন্ত গুরুত্বপূ‌র্ণ‌।

চিকিৎসকের মতে তরমুজ খুবই উপকারী একটি ফল যা সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে। এছাড়াও ডিহাইড্রেশন, অলসতা, শারীরিক শক্তির অভাব ইত্যাদি দূর হয়ে যায়। গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে কেননা পরিমাণে বেশি খেলে দেহের সুগারের মাত্রা বাড়তে পারে।

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত যে ফলগুলি খাওয়া যাবে না যেমন তরমুজ, পেঁপে আঙ্গুর, আনারস, বরফ জমানো বেরি টমেটো, খেজুর ইত্যাদি। যা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর। গর্ভবতী মহিলাদের ডায়েটে যে ফলগুলি খাওয়া উচিত কলা, আপেল, কমলালেবু, আম, তরমুজ, খেজুর ইত্যাদি।

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার পরিমাণ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, ডায়েটিশিয়ানরা স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থার জন্য প্রতিদিন প্রায় আধা কাপ তরমুজ খাওয়ার পরামর্শ দেন। একই সময়ে, এর অত্যধিক সেবনের কারণে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে, যা আমরা আপনাকে আরও বলব। তাই খেয়াল রাখতে হবে দিনে আধা কাপের বেশি তরমুজ যেন না খাওয়া হয়।

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি হয়

তরমুজে অনেক উপকারী উপাদান থাকে। যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং শরীর থেকে বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ দেহের বাইরে বের করে দিয়ে শরীরকে বিভিন্ন রোগ এর হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। একজন গর্ভবতী নারীর জন্য তরমুজ খাওয়া অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি হয়

কারন একজন গর্ভবতী নারী তরমুজ খেলে তা তার শিশুর জন্যও উপকারী হয়ে থাকে। আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা প্রশ্ন করেন, গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে কি? হ্যা, গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া যাবে। এখন চলুন জেনে নেই গর্ভাবস্থায় তরমুজ কি কি উপকার সাধন করে থাকে তা সম্পর্কে। উপকারিসমুহ নিম্নরুপঃ

  • গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার অনেক বেশি পরিমানে বুক জ্বালা এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে থাকে। যা একজন গর্ভবতী মহিলার কাছে অস্বস্তির কারন হয়ে থাকে। এসময় তরমুজ খেলে একজন গর্ভবতী নারী এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারে।
  • গর্ভবতী মহিলাদের অনেক সময় হাত এবং পায়ে পানি জমে যায়। যার কারনে হাত এবং পা অনেকসময় ফুলে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে একজন গর্ভবতী নারী তরমুজ খেতে পারে।
  • তরমুজে অনেক বেশি পরিমানে মিনারেল থাকে। গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে পানিশুন্যতা দেখা দেয়। সেই সময় তরমুজ খেলে পানিশুন্যতা দুর হয়ে থাকে।
  • গর্ভবতী মহিলারা অনেক সময় বমি বমি ভাব এবং দুর্বলতায় ভুগে থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গর্ভবতী নারী তরমুজ খেতে পারেন।
  • গর্ভাবস্থায় একজন নারীর দেহে সংক্রমনজনিত সমস্যা দেয়। এতে করে গর্ভের বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে একজন গর্ভবতী নারী তরমুজ খেতে পারেন।
  • তরমুজ খেলে আমাদের অনেক বেশি মুত্র হয়ে থাকে। এই মুত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে ক্ষতিকার পদার্থ বাইরে বের হয়ে যায়। তাই গর্ভবতী একজন নারী তার দেহকে সুস্থ রাখতে তরমুজ খেতে পারেন।
  • গর্ভাবস্থায় মহিলাদের খিচুনীর সমস্যা দেখা যায়। তরমুজ খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • গর্ভাবস্থায় একজন নারীর ত্বক নিস্তেজ হয়ে যায়। যা কোনো বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতির কারনে হয়ে থাকে। তরমুজ এর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
  • গর্ভবতী মহিলাদের একটি সাধারন সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে একজন নারী তরমুজ খেতে পারেন।
  • শিশু যখন ভ্রুন অবস্থায় থাকে, তখন তার হাড় গঠনে সাহায্য করে থাকে।

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা

অম্বল থেকে মুক্তি: বেশিরভাগ মহিলারা গর্ভাবস্থায় অম্বল হওয়ার অভিযোগ করেন। আসলে, বদহজমের কারণে এই সময়ে মহিলাদের মধ্যে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়, যার কারণে অনেক সময় মহিলাদের বুকে জ্বালাপোড়াও হতে হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তরমুজ খাওয়া উপকারী প্রমাণিত হয়েছে। 

পাকস্থলীতে উৎপন্ন অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তরমুজের রয়েছে, যা অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বলা যেতে পারে যে তরমুজ সেবন গর্ভাবস্থায় বুকের সমস্যা দূর করতেও সহায়ক হতে পারে।

ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে: গর্ভাবস্থায় প্রায় ৮০ শতাংশ নারীর হাত-পা ফুলে যাওয়ার সমস্যা থাকে। ডাক্তারি ভাষায় এটাকে শোথ সমস্যা বলা হয়। এই সমস্যায় তরমুজের ব্যবহার উপকারী ফল দেখাতে পারে। আসলে, তরমুজে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা গর্ভাবস্থায় হাতের ফোলা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তরমুজে পাওয়া লাইকোপিনের কারণে প্রদাহরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

সকালের অসুস্থতা থেকে মুক্তি পান: গর্ভাবস্থার প্রথম পর্যায়ে বেশিরভাগ মহিলাকে মর্নিং সিকনেসের সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যায় প্রধানত বমির সমস্যা দেখা দেয়। এমতবস্থায় উপশম পাওয়ার জন্য বেশি করে পানি পান করার পরামর্শ দেয়া হয়। 

একই সঙ্গে তরমুজে ৯২ শতাংশ পানি থাকার কারণে ডিহাইড্রেশনের সমস্যাসহ মর্নিং সিকনেসেও উপকারী বলে বিবেচিত হয়। এই কারণে, এটা বললে ভুল হবে না যে তরমুজ খাওয়ার ফলে আপনি মর্নিং সিকনেসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।

ডিহাইড্রেশন: বমি, ডায়রিয়ার মতো অনেক অবস্থার কারণে, মহিলাদের প্রায়ই গর্ভাবস্থায় ডিহাইড্রেশনের সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যা এড়াতে একমাত্র বিকল্প হল প্রতিদিন বেশি বেশি তরল খাওয়া, যাতে শরীরে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি থাকে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে, তাই তরমুজ খাওয়া পানিশূন্যতার ঝুঁকি দূরে রাখতেও সহায়ক।

পেশীর খিঁচুনি কমায়: গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার শরীরে অনেক পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তনগুলির কারণে, গর্ভাবস্থায় পেশী ক্র্যাম্পের সমস্যাও দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি এবং ভিটামিন সি যুক্ত খাবার এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে কার্যকরী। এই সব পুষ্টি উপাদান তরমুজে রয়েছে। এই কারণে, পেশী ক্র্যাম্পের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তরমুজ একটি দুর্দান্ত বিকল্প।

ত্বকের টোন বজায় রাখে: গর্ভাবস্থায় দৃশ্যমান পরিবর্তনগুলির মধ্যে একটি হল গর্ভবতীর ত্বকের স্বরে পার্থক্য, যা হাইপারপিগমেন্টেশন (ত্বকের কালো হওয়া) কারণে হয়। ত্বকে দৃশ্যমান এই পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে তরমুজ খাওয়াও উপকারী। আসলে তরমুজে ভিটামিন সি থাকে। 

এটি হাইপারপিগমেন্টেশনের বিরুদ্ধে ইতিবাচক প্রভাব প্রদর্শন করে ত্বকের বর্ণের উন্নতি হিসাবে কাজ করে। এই কারণে, তরমুজ খাওয়া গর্ভাবস্থায় ত্বকের স্বর পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করে: এনসিবিআই (ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন) এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তরমুজ সম্পর্কিত একটি গবেষণা উল্লেখ করেছে যে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং ফাইবার উপলব্ধ থাকার কারণে এটি হজম প্রক্রিয়ায় সহযোগিতামূলক লক্ষণগুলি প্রদর্শন করে। 

একই সময়ে, কোষ্ঠকাঠিন্য হজম সংক্রান্ত একটি সমস্যা, যেখানে ডাক্তাররা ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার এবং বেশি পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন। আঁশের পাশাপাশি তরমুজেও প্রচুর পরিমাণে পানি পাওয়া যায়। গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা জেনে নেওয়ার পাশাপাশি আপনারা চাইলে গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা সেই বিষয়ে আমাদের মাধ্যমে  জেনে নিতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া কি নিরাপদ

গর্ভাবস্থায় খাবারের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনি কী খাচ্ছেন এবং তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো কি না সেদিকে খেয়াল করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন, সেটি হলো তরমুজ গর্ভবতী নারীদের জন্য ভালো কি না? 

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া কি নিরাপদ

বিশষজ্ঞদের মতে, তরমুজ শুধু নিরাপদই নয়, গর্ভবতী মায়েদের জন্যও অত্যন্ত উপকারীও। এই সুমিষ্ট ফলটি পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং এটি বেশ কিছু স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে। এটি সুস্থ গর্ভধারণে সহায়তা করে। গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন-

হাইড্রেশনে সাহায্য করে

তরমুজে প্রায় ৯২% পানি থাকে, এটি হাইড্রেশনের জন্য একটি চমৎকার পছন্দ হতে পারে। গর্ভাবস্থায় সঠিক হাইড্রেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এবং অ্যামনিওটিক তরলের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ডিহাইড্রেশন অকাল প্রসব সহ বিভিন্ন জটিলতার কারণ হতে পারে, তাই তরমুজের মতো পানি-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া বিশেষভাবে সহায়ক হতে পারে।

পুষ্টি জোগায়

এর হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্য ছাড়াও, তরমুজ একটি পুষ্টিকর-ঘন ফল। এটি ভিটামিন এ, সি এবং বি৬ সমৃদ্ধ, যা মা এবং বিকাশমান শিশু উভয়ের জন্যই অপরিহার্য। ভিটামিন এ চোখের সুস্থ বিকাশে সহায়তা করে, ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং কোলাজেন গঠনে সহায়তা করে এবং ভিটামিন বি৬ শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে।

অ্যাসিডিটি দূর করে

গর্ভাবস্থায় অ্যাসিডিটি আরেকটি সাধারণ সমস্যা। তরমুজের ক্ষারীয় প্রকৃতি পেটের অ্যাসিড দূর করতে সাহায্য করে, যা অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয়। এছাড়াও তরমুজে থাকা ফাইবার উপাদান হজমে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে এ ধরনের সমস্যা খুব সাধারণ।

লাইকোপিনের প্রাকৃতিক উৎস

তরমুজ লাইকোপিনের একটি চমৎকার উৎস, একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ফলটিকে লাল রঙ দেয়। লাইকোপিন প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। প্রিক্ল্যাম্পসিয়া একটি গুরুতর গর্ভাবস্থার জটিলতা যা উচ্চ রক্তচাপ এবং লিভার ও কিডনির মতো অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। ডায়েটে লাইকোপিন-সমৃদ্ধ খাবার যোগ করলে স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থা বজায় রাখা সহজ হবে।

সতর্কতা

যদিও তরমুজ সাধারণত গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরাপদ, তবে এটি পরিমিত খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অত্যধিক তরমুজ খেলে তা রক্তে শর্করার মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে। গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত গর্ভবতী নারীদের তরমুজ খাওয়ার বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত।

এক্ষেত্রে পরামর্শের জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়া কি নিরাপদ জেনে নেওয়ার পাশাপাশি আপনারা চাইলে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না সেই বিষয়ে আমাদের মাধ্যমে  জেনে নিতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় তরমুজ খাওয়ার নিয়ম 

পরিমাণে নিয়ন্ত্রিতভাবে খান গর্ভবতী মায়েদের জন্য ২০০-৩০০ গ্রাম তরমুজ খাওয়া যথেষ্ট। অতিরিক্ত তরমুজ খেলে রক্তের শর্করার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে যা গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। 

গর্ভাবস্থার জন্য তরমুজ খাওয়া ভাল জেনে নিন তরমুজ সকালে বা দুপুরে খাওয়া ভালো রাতে বেশি তরমুজ খেলে বারবার প্রসাবের বেগ আসতে পারে যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। 

টাটকা তরমুজ খান কেটে রাখা তরমুজ অনেকক্ষণ রেখে দিলে এতে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিতে পারে তাই ফ্রিজে সংরক্ষিত বা কাঁটা তরমুজ দীর্ঘক্ষন রেখে খাওয়া ঠিক না। 

খাবারের পরপরই না খাওয়াই ভালো বড় মিল বা ভারি খাবারের পরপরই তরমুজ খাওয়া উচিত নয় কারণ এটি হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। খালি পেটে বা খাবারের ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পর তরমুজ খাওয়া ভালো। 

রাসায়নিক মুক্ত তরমুজ বেছে নিন বর্তমানে অনেক তরমুজে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই তরমুজ কেনার আগে সতর্ক থাকুন এবং সম্ভব হলে অর্গানিক বা দেশীয় তরমুজ বেছে নিন। 

গর্ভাবস্থার জন্য তরমুজ খাওয়া ভাল জেনে নিন বীজ কমিয়ে খান তরমুজের বীজ বেশি খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়। তাই সম্ভব হলে তরমুজের বীজ বাদ দিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করুনযে

আমাদের শেষ মতামত

আপনি যদি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যে আপনি জানতে পেরেছেন যে গর্ভাবস্থায় তরমুজ খেলে কি হয়। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় নিয়ম মেনে তরমুজ খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরে কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে না।

তাই আপনি যদি তরমুজের সঠিক উপকারিতা পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে খাওয়ার নিয়ম ফলো করে খেতে হবে। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের দৈনন্দিন জীবনে উপকারে আসবে। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন পারলে আমার জন্য দোয়া করবেন। যাতে করে নিয়মিত সঠিক ইনফরমেশন নিয়ে আপনাদের মাঝে আর্টিকেলের মাধ্যমে তুলে ধরতে পারি।

Atif Abdullah

Atif Abdullah is a passionate writer and expert in technology, Information and News. With years of experience in Information, he enjoys sharing insightful and well-researched content that helps readers stay informed. Atif has a keen interest in digital trends and his writing reflects his deep understanding and analytical approach.
Back to top button