শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় – শুক্রাণু কমে যাওয়ার লক্ষণ

শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় – শুক্রাণু হচ্ছে এক ধরনের পুংজননকোষ বা গ্যামেট যা যৌন জননের অ্যানাইসোগ্যামি আকারে দেখা যায়। অর্থাৎ শুক্রাণু বলতে জীবের পুংজননকোষকে বোঝায়। শুক্রাণু হচ্ছে প্রকৃত জনন কোষ। শুক্রাণু হচ্ছে এক ধরনের শুক্রাণুর সেলুলার উপাদান। শুক্রাণু হচ্ছে একধরণের পুরুষ জনন কোষ।
শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় ও শুক্রাণু কমে যাওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে অনেকেই জানেনা। যার ফলে তারা তাদের অজান্তেই বন্ধ্যাত্বের কারণ হয়ে উঠছে। পুরুষদের শরীরে শুক্রাণুর পরিমাণ কম থাকলে কিছু শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় রয়েছে, যা অনুসরণ করার ফলে খুব দ্রুত শুক্রাণু বৃদ্ধি পাবে।
দেহে শুক্রাণু সংখ্যা কমে গেলে প্রজননে বহুবিধ সমস্যা সৃষ্টি হয়। দেশের শুক্রানুর সংখ্যা অত্যাধিক পরিমাণ কমে যাওয়াকে অলিগোস্পার্মিয়া বলে অভিহিত করা হয়। এটি এমন এক পরিস্থিতি যেখানে প্রতি মিঃ লিঃ তে ১৫ কোটি শুক্রানু কমে যেতে পারে।
এই পোস্টটি পুরোটা পড়লে আপনারা শুক্রানু বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায় জেনে নেওয়ার পাশাপাশি শুক্রাণু বৃদ্ধির ব্যায়াম সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে এখনি পুরো পোস্টটি পড়ুন।
শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায়
শুক্রাণু শুধু যৌন চাহিদায় ভূমিকা রাখেনা এটি সন্তান গ্রহণের জন্য খুব বড় ভূমিকা পালন করে। পুরুষদের শুক্রাণু কম থাকলে যৌনজীবনে পুরোপুরি তৃপ্তি মিলে না একই সঙ্গে এটি বন্ধ্যাত্বের একটি বড় কারণ। তাই যে সব পুরুষদের শুক্রাণু কম থাকে তারা শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় গুলো কি এই সম্পর্কে জানতে চাই।
এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করলে পুরুষদের শুক্রাণু বৃদ্ধি পাবে। শুক্রাণু বৃদ্ধি পেলে যৌন তৃপ্তি পরিপূর্ণভাবে উপলব্ধি করতে পারবে। এবং সন্তান উৎপাদনের জন্য কোন সমস্যা থাকবে না। নিচে শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় গুলো আলোচনা করা হলো।
📌আরো পড়ুন 👉 স্বপ্নদোষ কি রোজা ভঙ্গের কারণ
রসুনঃ শুক্রাণুর সক্রিয়তা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর একটি উপাদান সেলোনিয়াম। এ উপাদান টি পাওয়া যায় রসুনে। তাই নিয়মিত রসুন খেলে শুক্রাণু বৃদ্ধি পাবে এবং একই সাথে কামশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
ভিটামিন সিঃ যে ধরনের ফলগুলোতে ভিটামিন সি সবচেয়ে বেশি থাকে সে জাতীয় ফলগুলো শুক্রাণু বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি পাওয়া যায় লেবু, আঙ্গুর এবং বিভিন্ন টক জাতীয় ফল। এ ফলগুলোতে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় তা শুক্রাণুর মান বাড়াতে সাহায্য করে।
সামুদ্রিক বা তৈলাক্ত মাছঃ সামুদ্রিক বা তৈলাক্ত মাছে পাওয়া যায় ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। ওমেগা ৩ পুরুষদের ব্রীজের মান বাড়াতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। তাই নিয়মিত সামুদ্রিক বা তৈলাক্ত মাছ খেলে শুক্রাণু বৃদ্ধি পাবে।
কলাঃ কলাতে পাওয়া যায় ভিটামিন বি৬ এবং আরো অনেক উপাদান। যার ফলে কলা শুক্রাণু বৃদ্ধিতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন খাবার তালিকায় একটি করে কলা রাখুন।
ব্যায়ামঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলেশুক্রাণুসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। তাই প্রতিদিন অল্প কিছু সময়ের জন্য হলেও ব্যায়াম করুন।
স্বাস্থ্যকর খাবারঃ যৌন শক্তি উন্নতি করতে চাইলে প্রতিদিন সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করুন। মদ্যপান সিগারেট এগুলো থেকে দূরে থাকুন। অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গ্রহণ করবেন না। যে ধরনের খাবারগুলোতে জিংকের পরিমাণ বেশি সে ধরনের খাবারগুলো গ্রহণ করুন।
ডার্ক চকলেটঃ যৌন শক্তি এবং শুক্রাণু বৃদ্ধি করার জন্য যে পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রয়োজন তা পাওয়া যায় ডার্ক চকলেটে। এছাড়াও HCL এবং অ্যামিনো এসিড পাওয়া যায় এই চকলেটে। যার ফলে এটি শুক্রাণু বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় কি বা কিভাবে শুক্রাণু বৃদ্ধি করা যায় আশা করি এ সম্পর্কে একটি পুরোপুরি ধারণা পেয়েছেন। উপরোক্ত খাবারগুলো নিয়মিত গ্রহণ করলে অতি দ্রুত আপনার শুক্রাণু বৃদ্ধি হবে।
শুক্রাণু বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায়
শুক্রাণু বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায় নিম্নে তুলে ধরা হলঃ
রসুন: রসুন আমাদের দেহে প্রাকৃতিক কাম উৎপাদক রস হিসেবে কাজ করে। রসুনে এলিসিন নামক এক ধরনের উপাদান রয়েছে যা শুক্রাণু উৎপাদন বৃদ্ধি করে, শুক্রাণুর সহনশীলতা ও রক্ত সঞ্চালনের গতিকে বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন খাবারের সাথে কয়েক টুকরো করে রসুন খেলে দেহে শুক্রানুর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।
অশ্বগন্ধা: অশ্বগন্ধা দেহে বীর্যের সংখ্যা বৃদ্ধি ও শুক্রাণুর গতিশীলতাকে বৃদ্ধি করে। এছাড়াও অশ্বগন্ধা দেহে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে। একটি সমস্ত শরীরকে সুস্থ এবং স্বাভাবিক রেখে দেহের সকল অভ্যন্তরীণ কর্মকান্ড ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করে। দেহের শুক্রানুর সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য তাই অশ্বগন্ধা পাউডার এর সাথে দুধ মিশিয়ে খেতে পারেন।
মাকা রুট: কালো বৈচিত্র্য সম্পন্ন এক ধরনের মূল যা শুক্রাণু উৎপাদনে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে থাকে। একটি নিয়মিত খেলে দেহে শুক্রাণুর মাত্রা বহু গুণে বেড়ে যাবে। সেজন্য প্রত্যেকদিন খাবার পরে এক থেকে দুই চামচ মাখা রূট খেতে পারেন।
কলা: অতি পরিচিত ও সহজলভ্য এই ফলটি শুক্রাণুর পরিমাণ অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। কলাতে বোমেনাইল নামের বিশেষ এক ধরনের উৎসেচক রয়েছে। এটি যৌন উদ্দীপক হরমোনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে।
তৈলাক্ত মাছ: তৈলাক্ত মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এটি শুক্রাণুর গুণ বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষনায় দেখা গেছে, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত মাছ খেলে শুক্রাণুর গুণ ও পরিমাণ দুই-ই বাড়ে। তাছাড়া এটি মস্তিষ্কে যৌন উদ্দীপনার অনুভুতি জাগিয়ে তোলে।
ফল ও শাকসবজি: বেরি, পালং শাক, ব্রকোলি – এগুলোতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
বাদাম ও বীজ: আখরোট, কুমড়ার বীজ – এগুলোতে অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা শুক্রাণু উৎপাদনে সাহায্য করে।
চর্বিহীন প্রোটিন: স্যামন, মুরগি – এই খাবারগুলো সামগ্রিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শুক্রাণুর স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।
জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার: ঝিনুক, কুমড়ার বীজ, মসুর ডাল – জিঙ্ক টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ডার্ক চকোলেট: এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা যৌন উদ্দীপনা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও ডার্ক চকোলেটে আছে এল-আর্জিনিন এইচসিএল ও অ্যামিনো অ্যাসিড। এই উপাদানগুলো শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়।
লেবুজাতীয় ফল: লেবুজাতীয় ফলে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পুরুষের শুক্রাণুর মান উন্নত করে। লেবু, আঙ্গুরের রস এই সমস্যায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নিয়মিত ব্যায়াম: মোটা হলে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
পর্যাপ্ত ঘুম: শরীরের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াগুলো সঠিকভাবে চলার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি।
ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার: ধূমপান ও মদ্যপান শুক্রাণুর সংখ্যাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তামাক পরিহার: তামাক শরীরের জন্য ক্ষতিকর এবং শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো নয়।
পর্যাপ্ত পানি পান: শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
পুরুষের শরীরে শুক্রাণু হচ্ছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। এই শুক্রাণু ব্যতীত একটি পুরুষ সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম। তাই আপনার শরীরে(জননাঙ্গে) অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমানে শুক্রাণু থাকতে হবে।
শুক্রাণু তৈরির উপায় হিসেবে শুক্রাণুর কার্যকারিতা বৃদ্ধির উপায় হিসেবে আপনি প্রতিদিন সিদ্ধ ডিম খেতে পারেন। এছাড়াও শুক্রাণু তৈরির উপায় হিসেবে আপনি রসুন খেতে পারেন কেননা রোশনের রয়েছে ভিটামিন বি ও সেলেনিয়াম যা আপনার শুক্রাণুকে কার্যকারী করে তুলবে।
কি খেলে শুক্রাণু বাড়ে
পুরুষের শরীরে শুক্রাণু প্রাকৃতিক নিয়মেই তৈরি হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে শুক্রাণু কমে যায় বা শুক্রাণুর বিলুপ্ত ঘটতে পারে। হতে পারে অসুস্থতার কারণে বা নিজের বদভ্যাসের কারণে। অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে শুক্রাণু সংখ্যা কমে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে কি খেলে শুক্রানু বাড়ে অবশ্যই তা জানা উচিত।
📌আরো পড়ুন 👉 গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের সতর্কতা
শুক্রাণু বৃদ্ধির জন্য আপনি রসুন খেতে পারেন। শুক্রাণু বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রসুনের গুরুত্ব অপরিসীম। রসুনের নিচে ভিটামিন বি ও সেলেনিয়াম। এ উপাদানগুলো শুক্রানু বৃদ্ধি বা শুক্রাণুর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। পুরুষের শুক্রাণু কমে গেলে তাদের সন্তান লাভের আশা কমে যায়। WHO এর মতে, একজন পুরুষের এক মিলি লিটারে ১৫ মিলিয়ন শুক্রানু থাকা প্রয়োজন।
এর কম হলে এটি স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, পুরুষদের শরীরে ভিটামিন এবং জিংক এর পরিমাণ কম থাকলে সে পুরুষের বন্ধুত্ব হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। অর্থাৎ পুরুষদের খাদ্য অভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনলে এই শুকানোর মান বেড়ে যাবে।
আমরা এই আর্টিকেলে আর্টিকেলে আলোচনা করব কি খেলে শুক্রানু বাড়ে এ সম্পর্কে বিস্তারিত। কিছু চিকিৎসকের মতে নিচের খাবারগুলো গ্রহণ করলে শুক্রানুর সংখ্যা বেড়ে যাবে।
ডার্ক চকলেটঃ যৌন শক্তি এবং শুক্রানু বৃদ্ধি করার জন্য যে পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রয়োজন তা পাওয়া যায় ডার্ক চকলেটে। এছাড়াও HCL এবং অ্যামিনো এসিড পাওয়া যায় এই চকলেটে। যার ফলে এটি শুক্রানু বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
টমেটোঃ টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং লাইকোপেন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শুক্রানু বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। টমেটো কাঁচা এবং রান্না উভয় অবস্থায় খেতে পারেন।
কাঠবাদামঃ কাঠ বাদামে পাওয়া যায় ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। প্রতিদিন খাবার তালিকা কিছু বাদাম রাখুন এটি শুক্রাণুর মান বাড়াতে সাহায্য করে।
ডালঃ ডালে পাওয়া যায় ফলিক অ্যাসিড। তাই এটি শুক্রানু বাড়াতে সাহায্য করে।
আনারঃ আনারে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাই আনারের রস খেলে মহিলা এবং পুরুষের উভয়ের যৌন চাহিদা বেড়ে যায়।
মধু এবং দুধঃ প্রতিদিন এক গ্লাস দুধের সাথে এক থেকে দুই চামচ মধু মিশিয়ে খেলে শুক্রানুর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
কুমড়োর বীজঃ কাঁচা কুমড়োর বীজ খাওয়া ভালো। এটি পুরুষের শরীরে স্বাস্থ্যকর টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি করে।
ডিমঃ ডিমে পাওয়া যায় ভিটামিন ই এবং প্রোটিন। যার ফলে প্রতিদিন ডিম খেলে শুক্রানুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
জিংক জাতীয় খাবারঃ যে সকল খাবারগুলোতে জিংক এর পরিমাণ বেশি থাকে এ ধরনের খাবারগুলো নিয়মিত গ্রহণ করলে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
শুক্রাণু বৃদ্ধির ব্যায়াম
দেহের শুক্রানু বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে শুক্রাণু বৃদ্ধির কিছু কার্যকরী ব্যায়াম রয়েছে। এই ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করলে আপনারা শুক্রাণু বৃদ্ধি করতে পারবেন। তবে চলুন এখন শুক্রাণু বৃদ্ধির ব্যায়ামগুলো সম্পর্কে ধারণা অর্জন করি।
চিকিৎসকদের গবেষণালবদ্ধ ফলাফল থেকে জানা যায় প্রতিদিন আধাঘন্টা সময় ধরে অ্যারোবিক এক্সারসাইজ করলে দেহে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। একটানা ১৬ সপ্তাহ এভাবে শরীরচর্চা করলে দেহের শুক্রানু বৃদ্ধি পাবে।
সকল প্রকার মানসিক চিন্তা মুক্ত থেকে প্রত্যেকদিন সকালে স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ করা যেতে পারে। এছাড়াও সাঁতার কাটা, বাইসাইকেল চালানো প্রভৃতি শুক্রানু বৃদ্ধির ব্যায়াম এরই অংশ।
শুক্রাণু কমে যাওয়ার লক্ষণ
কখনও কখনও অভ্যন্তরিক কারণ, যেমন ভ্যারিকোসেলে, শুক্রাণুর সংখ্যা কম করে দিতে পারে। কিন্তু ধুমপান, নেশা জাতীয় দ্রব্যের সেবন, খারাপ ভোেজন এবং নিয়মিত ব্যায়াম না করা ইত্যাদির কারণে শুক্রানুর সংখ্যা কমে যেতে পারে। কিছু বহিরাগত কারণ যা আপনার শুক্রানুর সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে
কম শুক্রানু উৎপাদনের ক্ষেত্রে গরমের ক্ষতিকারক প্রভাব থাকে। ঘন ঘন গরম জলে স্নান করা বা ট্যাব ব্যবহার করা, দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা, টাইট আন্ডারওয়্যার, স্থূলতা ইত্যাদি অণ্ডকোষে তাপমাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।
হরমোনের ভারসাম্যের উপর চিন্তা একটি বৃহত্তর প্রভাব ফেলে যা শুক্রাণু উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে। অত্যাধিক সোয়া জাতীয় খাবারে (সোয়া দুধ, সোয়া বার্গার ইত্যাদি) আইসোফ্লাবা কেন্দ্রভূত হয়,টেসটোস্টেরনের জন্য প্রয়োজনীয় ইস্ট্রোজেন রিসেপটর সাইটগুলিকে ফাইটোইস্ট্রোজেন ব্লক করে।
শুক্রাণু কমে যাওয়ার আরও কিছু লক্ষণ নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
- সহবাসের সময় কম সময়ে বীর্যপাত হয়ে যাওয়া।
- যৌন ইচ্ছা বা চাহিদা অনেকটা কমে যাওয়া
- অন্ডকোষের আশেপাশে ফুলে যাওয়া এবং ব্যথা করা
- স্তনের অস্বাভাবিক পরিবর্তন হয়ে যাওয়া
- যেকোনো কিছুর গন্ধ গ্রহণে অক্ষমতা
- শ্বাসযন্ত্রের বারবার সংক্রমণ দেখা দেওয়া
শুক্রাণু কমে যাওয়ার কারণ
শুক্রাণু কমে যাওয়ার যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে পুরুষের কিছু ভুল কাজ মানে ভুল ভাবে চলাফেরা করার জন্য শুক্রাণু কমে যায়। যার ফলে একজন পুরুষ সন্তান জন্মদানে অক্ষম হয়ে পড়ে। সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য একজন পুরুষের পর্যাপ্ত পরিমাণ শুক্রাণু থাকা প্রয়োজন অনেকেরই শুক্রাণু কমে যাচ্ছে কি কারনে শুক্রাণু কমে যাচ্ছে বা যায় সেগুলো কারণ জেনে রাখুন।
১। শুক্রাণু কমে যাওয়ার প্রথম এবং প্রধান কারণ হলো হস্তমৈথুন করা কারণ অনেক পুরুষের অভ্যাস রয়েছে হস্তমৈথুন করা এবং এটা নিয়মিত করার কারণে পুরুষের শুক্রাণু কমে যায় এতে করে সেই পুরুষ আস্তে আস্তে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হারাতে থাকে।
২। অতিরিক্ত টাইট এবং আটোসাটো আন্ডারওয়্যার নিয়মিত সবসময় পড়ে থাকার জন্য এটা অনেক সময় শুক্রাণু তৈরি হওয়াতে বাধা প্রদান করে আর এতে করে শুক্রাণু তৈরি হতে পারে না এবং আস্তে আস্তে শুক্রাণু কমে যায়।
৩। যারা প্রতিনিয়ত ধূমপান করেন তাদের শুক্রাণু তৈরি হওয়া কমে যায় এবং ধীরে ধীরে আরো বেশি শুক্রাণু কমে যেতে থাকে।
৪। অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে শুক্রাণু উৎপাদন কমে যায় এবং এটা আস্তে আস্তে শুক্রাণু কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে তাই সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা যদি না হারাতে চান তাহলে অতিরিক্ত মদ্যপান করা থেকে বিরত থাকুন।
৫। অনেকের অভ্যাস রয়েছে একটু কিছু হলেই গরম পানিতে গোসল করা কিন্তু নিয়মিত গরম পানিতে গোসল করার ফলে এটা শুক্রাণু তৈরি হওয়াতে বাধা প্রদান করে এবং আস্তে আস্তে শুক্রাণু কমে যায়।
৬। অনেকে বেশি বেশি সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন কিন্তু এই সানস্ক্রিন অতিরিক্ত ব্যবহার করার কারণে সানস্ক্রিন এর মধ্যে থাকা কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো শুক্রাণু কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে তাই অতিরিক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন না।
শুক্রাণু কোথায় তৈরি হয়
শুক্রাণু, নামটি অবশ্যই শুনেছেন কিন্তু আপনি কি জানেন শুক্রাণু কোথায় তৈরি হয়? যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই সেকশনটি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন কেননা আমি এখন আপনাকে শুক্রাণু কোথায় তৈরি হয় সে সম্পর্কে জানাবো। শুক্রাণু কোথায় তৈরি হয় জেনে নিন।
শুক্রাণু তৈরির প্রক্রিয়াকে বলা হয় স্পার্মাটোজেনেসিস। শুক্রাণু তৈরি হয় পুরুষের জননাঙ্গে অর্থাৎ শুক্রাশায়ে স্পার্মাটোজেনেসিস প্রক্রিয়ায়। স্পার্মাটোজেনেসিস প্রক্রিয়ায় পুরুষের জননাঙ্গে শুক্রাণু তৈরি হয়। শুধু জীবের শুক্রাণু থাকে তা নয় উদ্ভিদের ও শুক্রাণু থাকে। উদ্ভিদের পরাগরেণু তে শুক্রাণু থাকে।
শুক্রাণু তৈরি হতে কতদিন সময় লাগে
আমরা অনেকেই শুক্রাণু তৈরি হতে কতদিন সময় লাগে এই বিষয়ে জানি না। বয়সন্ধিকালে একজন পুরুষের শুক্রাণু তৈরি হওয়া শুরু হয়। এবং শুক্রাণু মানুষ ভেদে এবং শরিরের কার্যক্ষমতা অনুযায়ী প্রাথমিক ক্ষেত্রে তৈরি হতে ৭২ দিন থেকে ১২০ দিন পর্যন্ত লাগে। একজন পুরুষের বয়স যখন ১২-১৩ বছর হয় তখন থেকে তাদের শুক্রাণু তৈরি হওয়া শুরু হয়।
পুরুষের শরীরে শুক্রাণু উৎপাদন হচ্ছে একটি নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া। অর্থাৎ একটি চক্রাকারে সব সময় পুরুষের দেহে শুক্রাণু উৎপাদন হতেই থাকে। শুক্রাণু উৎপাদন পরিপূর্ণ হলে কোনো না কোনো মাধ্যমে সেটি বের হয়ে আবার নতুন করে উৎপাদন হতে থাকে। এই শুক্রাণু প্রচুর পরিমানে শুক্রাণু থাকে। এই শুক্রাণু একটি চক্রাকারে উৎপাদন হতে থাকে। এই চক্রাকারে একটি চক্র সম্পূর্ণ হতে প্রায় ৭২ দিন সময় লাগে।
এক ফোটা বীর্যে কত শুক্রাণু থাকে
এক ফোঁটা (প্রায় ০.০৫ মিলিলিটার) বীর্যে আনুমানিক ৫ থেকে ১৫ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকতে পারে। তবে সম্পূর্ণ বীর্যপাতের ক্ষেত্রে, যা সাধারণত ২-৫ মিলিলিটার হয়, তাতে মোট ১০০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকতে পারে।তবে, এই সংখ্যা ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয় এবং এটি নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর, যেমন ,স্বাস্থ্য ও খাদ্যাভ্যাস, বয়স ও শারীরিক অবস্থা, ধূমপান বা অ্যালকোহল গ্রহণের অভ্যাস , স্ট্রেস ও জীবনযাত্রা ।
উর্বরতার জন্য সাধারণত প্রতি মিলিলিটারে ১৫ মিলিয়ন বা তার বেশি শুক্রাণু থাকা দরকার। এর চেয়ে কম হলে সেটিকে লো স্পার্ম কাউন্ট Oligospermia ধরা হয়, যা সন্তান উৎপাদনের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে।
এক ফোঁটা বীর্যে (প্রায় ০.০৫ মিলিলিটার) আনুমানিক ৫ থেকে ১৫ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকতে পারে।সম্পূর্ণ বীর্যপাত সাধারণত ২-৫ মিলিলিটার হয়, যাতে মোট ১০০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন শুক্রাণু থাকতে পারে।
লেখকের শেষ মতামত
আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় – শুক্রাণু কমে যাওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত। পুরুষদের শরীরে বীর্য কম থাকলে তাদের সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা থাকে না। তাই যে সব পুরুষরা শুক্রাণু কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় এ সম্পর্কে দুশ্চিন্তা করছেন তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
আশা করছি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে শুক্রাণু তৈরি হতে কতদিন সময় লাগে এবং শুক্রাণু কোথায় তৈরি হয় তা জানতে পেরেছেন। এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায় – শুক্রাণু কমে যাওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ।